নিজস্ব প্রতিবেদক:
জনপ্রশাসনে উপসচিব থেকে যুগ্ম সচিব এবং যুগ্ম সচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব পদে খুব শিগগির আবারও পদোন্নতি দেওয়া হবে। এছাড়া বিগত সময়ে বঞ্চিত হওয়া অতিরিক্ত সচিবদের গ্রেড-১ পদে পদোন্নতি দিয়ে চাকরি থেকে বিদায় করা হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান। রোববার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গ্রেড-১ পদে পদোন্নতি দিলে তাঁরা সামাজিক ও পারিবারিক মর্যাদা এবং আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। জনপ্রশাসনে বর্তমানে ৪৬৫ জন অতিরিক্ত সচিব রয়েছেন। তবে তাদের সবাইকে গ্রেড-১ পদে পদোন্নতি দেওয়া হবে না বলে জানান তিনি। পাঁচটি বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে দুই বছরের কম সময়ের মধ্যে ১৮ হাজার ১৫০ চাকরিপ্রত্যাশীকে নিয়োগ দেওয়া হবে বলেও জানান জনপ্রশাসন সচিব। শিগগিরই ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এ বিসিএসের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যাডারে ৩ হাজার ৪৮৭টি পদে নিয়োগ দেওয়া হবে।
জনপ্রশাসন সচিব বলেন, জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগের জন্য আবারও বাছাই তালিকা (ফিট লিস্ট) করা হবে। তাঁদের মধ্যে থেকে নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। একই সঙ্গে অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদোন্নতিও বিধি মোতাবেক শুরু হবে। পর্যাপ্ত পদ ছাড়া পদোন্নতি নিয়ে সমালোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, অনেককে পদোন্নতির পরও পদ দেওয়া যায়নি, এটি আলাদা বিষয়। কিন্তু ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতি আটকে গেলে আবার আরেক বিষয়। তবে যাঁদের নামে ফৌজদারি ও দুর্নীতির অভিযোগে এবং বিভাগীয় মামলা আছে, তাঁদের এই বিবেচনায় আনা হবে না।
তিনি বলেন, ৪৩তম বিসিএসে ২০৬৪ জনের গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। আগামী ১ জানুয়ারি তাদের যোগদানের তারিখ নির্ধারিত আছে। অধিকতর স্বচ্ছতার স্বার্থে গোয়েন্দা সংস্থা- এনএসআই ও ডিজিএফআই এর মাধ্যমে অধিকতর যাচাই-বাছাই চলমান আছে। তিনি বলেন, ৪৫তম বিসিএস এর প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ১২,৭৮৯ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়েছিল। প্রথম পরীক্ষকের মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন শেষে দ্বিতীয় পরীক্ষকের মূল্যায়নের কাজ শেষের পথে ছিল। সম্প্রতি নতুন কমিশন গঠনের পর লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নে ‘স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা বজায় রাখার স্বার্থে’ এ লিখিত পরীক্ষার সব উত্তরপত্র তৃতীয় পরীক্ষককে দিয়ে মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত হয়।
৪৬তম বিসিএস এর প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলাফল গত ৯ মে প্রকাশিত হয়। তাতে ১০ হাজার ৬৩৮ জন প্রার্থীকে লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়। এক্ষেত্রে ‘সম্ভাব্য বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে’ নির্বাচিত প্রার্থীদের সঙ্গে সমান সংখ্যক, অর্থাৎ ১০ হাজার ৬৩৮ জনকে যোগ করে মোট ২১ হাজার ২৭৬ জন প্রার্থীকে লিখিত পরীক্ষার জন্য যোগ্য বিবেচনা করে পুনরায় ফলাফল ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়। সব প্রক্রিয়া শেষে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার সার্কুলার জারি করা হবে বলে জানান জনপ্রশাসন সচিব।
সচিব জানান, ৪৩তম বিসিএসে ক্যাডার পদে ২০৬৪ জন, ৪৪তম বিসিএসে ১৭১০ জন, ৪৫তম বিসিএসে ২৩০৯ জন, ৪৬তম বিসিএসে ৩১৪০ জন এবং ৪৭তম বিসিএসে ৩৪৮৭ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এ ছাড়া নন-ক্যাডার পদে ৪৩তম বিসিএস থেকে ৬৪২ জন, ৪৪তম বিসিএসের ১৭৯১ জন, ৪৫তম বিসিএসে ১৫৭০ জন, ৪৬তম বিসিএসে ১১১১ জন, ৪৭তম বিসিএসে ৩২৫ জনসহ ক্যাডার ও নন ক্যাডার পদে ১৮১৪৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এসব নিয়োগ প্রক্রিয়া যত দ্রুত সম্ভব সমাপ্ত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, সবশেষ যে ৪৭ তম বিসিএস পরীক্ষার সার্কুলার আসছে, সেখানে দুই বছরের কম সময়ের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা বলেছেন তারা।