নদী নিয়ে ভারতের কর্তৃত্ববাদী স্বার্থে বিপর্যস্ত বাংলাদেশ

531
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

ভূ-রাজনীতির ক্ষেত্রে ভারতের কর্তৃত্ববাদী স্বার্থ আর বিগত সরকারের অতি ভারত প্রীতির কারণেই আলোর মুখ দেখেনি তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা। ফলশ্রুতিতে, ভাঙন, প্লাবন আর খরায় বিপর্যস্ত উত্তরাঞ্চল। এতে অভিন্ন নদীর উজানে নানা প্রকল্প নিয়ে ভারত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের উচিত জাতিসংঘে এর প্রতিকার দাবি করা। একইসঙ্গে, সমীক্ষা অনুযায়ী বর্তমান সরকারের তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে খুব দ্রুত উদ্যোগ নেয়া।
জানা যায়, ১৯৯৭ সালে জাতিসংঘ পানিপ্রবাহ কনভেনশন অনুযায়ী, অভিন্ন নদীর পানি এমনভাবে ব্যবহার করা যাবে না, যাতে ভাটির দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

অথচ, তিস্তা ও এর উপনদীতে গজলডোবাসহ একাধিক বাঁধ, খাল ও জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করে দীর্ঘ সময় ধরে এক তরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করছে ভারত। এমনকি, কোনো পূর্বাভাস ছাড়াই পানি ছাড়ছে উজানের এই দেশে। এতে, ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। আর শুষ্ক মৌসুমে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত পানি।

রিভারাইন পিপলের পরিচালক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘অভিন্ন নদীতে কোনো প্রকল্প গ্রহণ করলে সেটা জানানো নিয়ম রয়েছে, যদি কখনো পানি ছেড়ে দিতে হয়, সেটাও জানানোর নিয়মে পড়ে। কিন্তু ভারত বারবার কোনো রকম না জানিয়ে ওই পানি ছেড়ে দেয়।’

এমন পরিস্থিতিতে দাবি ওঠে, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের। ২০১৮ সালে এর একটি সমীক্ষা শেষ করে চীন। কিন্তু, ভূ-রাজনৈতিক দ্বৈরথে সেই প্রকল্প ভারতের হস্তক্ষেপে ঝুলে যায়।

রংপুর তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী বলেন, ‘এ অঞ্চলের মানুষ কেন ভারতের বিরোধিতা করছেন? কারণ তিস্তা নিয়ে আমাদের সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ চোখে পড়ে না। এখানে কর্তৃত্ববাদী স্বার্থ রূপান্তরিত হয়েছে। ভারতের কর্তৃত্ববাদী স্বার্থ আর বিগত সরকারের অতি ভারত প্রীতির কারণে শুধু তিস্তা মহাপরিকল্পনাই নয়, আটকে আছে তিস্তা চুক্তিও।

ভারতের এমন আগ্রাসীনীতির কারণে মারাত্মক সংকটে উত্তরের জনজীবন, চাষাবাদ, প্রাণবৈচিত্র্যসহ সামগ্রিক পরিবেশ। প্রত্যাশা, বর্তমান সরকারের হাত ধরেই বাস্তবায়নের পথে হাঁটবে উত্তরের কোটি মানুষের স্বপ্ন তিস্তা মহাপরিকল্পনা, একইসঙ্গে, আলোর মুখ দেখবে তিস্তা চুক্তি।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন