সরকারের ব্যর্থতার কারণেই রমজানেও দেশের মানুষ স্বস্তিতে দিন কাটাতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার (৩ এপ্রিল) প্রথম রোজায় এতিম ও উলামা-মাশায়েখদের সন্মানে এক ইফতার অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, আজকে মাহে রমজানের মধ্যেও আমরা শান্তিতে স্বস্তিতে দিন কাটাতে পারছি না। আমাদের প্রত্যেকটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। এলপিজি গ্যাসের দামও টানা বাড়িয়ে চলেছে। তারা ব্যর্থ বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে, তারা ব্যর্থ হয়েছে অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে গণতন্ত্রকে সম্পূর্ণভাবে হত্যা করে আজকে দেশে একটা ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি করেছে তারা।
ফেব্রুয়ারি, মার্চে এলপিজি গ্যাসের দাম বৃদ্ধির পর এপ্রিল মাসেও দাম বৃদ্ধির নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব।
রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থার ভয়াবহতার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা দেখেন আজকে এখানে (ইফতার অনুষ্ঠান) অনেক মেহমান আসতে পারেননি, আলেম-উলামা, মাদ্রাসার ছেলে-মেয়েরা আসতে পারেননি। কারণটা কী? ট্রাফিক জ্যাম। এতো ভয়াবহ ট্রাফিক জ্যাম যে, কেউ এসে পৌঁছাতে পারেননি।
ইফতারের সময়ে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রতিবছর আমরা ১৬ কোটি মানুষের প্রিয় মানুষ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে ইফতার করেছি। দুর্ভাগ্য আমাদের সাবেক প্রধানমন্ত্রী তিনি আজকে অসুস্থ অবস্থায় গৃহবন্দি রয়েছেন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদের কাছে থেকে ৮ হাজার মাইল দূরে নির্বাসিত অবস্থায় রয়েছেন।
জাতীয়তাবাদী উলামা দলের আহ্বয়ক মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক বলেন, রাজধানীর তিনটা মাদ্রাসা থেকে তিন শতাধিক এতিম শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন মাদ্রাসার উলামা-মাশায়েখরা এই ইফতারে অংশ নেন। প্রচন্ড যানজটের কারণে অনেক আমন্ত্রিত মেহমান ইফতার শুরুর পর এসে উপস্থিত হয়েছেন। রোজা রেখে তাদেরকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
ইস্কাটন গার্ডেনের লেডিস ক্লাবে বিএনপি এতিম ও উলামা-মাশায়েখদের সন্মানে এই ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ইফতারের ঠিক ১৫ মিনিট আগে অর্ধেক অতিথি অনুষ্ঠানে এসে পৌঁছাতে পেরেছেন। বিএনপি মহাসচিব প্রচন্ড ট্রাফিক জ্যামে আটকে থেকে পরে পথ থেকে মোটর সাইকেলে অনুষ্ঠান স্থলে এসে পৌঁছান।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসও ইফতার শুরুর সময়েই অনুষ্ঠান স্থলে এসে পৌঁছান। তিনি জানান, প্রচন্ড ট্রাফিক জ্যামে নিজের গাড়ি রাস্তায় রেখে পায়ে হেটে আসতে হয়েছে।
তেজগাঁও মহিলা এতিম খানা, শান্তিনগর এতিমখানা ও হাফেজিয়া মাদ্রাসা এবং ফার্মগেইট মাদ্রাসা এতিম শিক্ষার্থীদের এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়। মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ইফতার শুরুর প্রায় ৫মিনিট পর অনুষ্ঠান স্থলে এসে পৌঁছায়।
উলামা-মাশায়েখদের মধ্যে বাড্ডা জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মোশাররফ হোসেন, স্পিচ অব ইসলামের প্রেসিডেন্ট মাওলানা রেজাওয়ানুর রহমান খাঁন, মোহাম্মদপুর রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ জামে মসজিদের ইমাম মুফতি মহিউদ্দিন আহমেদ, মোহাম্মদপুর বায়তুল ফজল সিনিয়র মাদ্রাসার প্রধান মাওলানা গোলাম মাওলা মূল মঞ্চে ছিলেন।
ইফতারে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুল কাইয়ুম, ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক ও সদস্য সচিব মাওলানা নজরুল ইসলাম তালুকদার ছিলেন।
ইফতার শুরুর আগে বিভিন্ন টেবিল ঘুরে আগতদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বিএনপি মহাসচিব।