রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতি হত্যা মামলায় গ্রেফতার পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছেন আদালত।
রোববার (৩ এপ্রিল) আসামিদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে ১০ দিনের জন্য হেফাজতে চেয়ে আবেদন করেন টিপুর স্ত্রীর করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক মোহাম্মদ ইয়াসিন শিকদার।
শুনানি শেষে মহানগর হাকিম সৈয়দ মোস্তফা রেজা নূর প্রত্যেক আসামিকে পাঁচ দিন রিমান্ডের আদেশ দেন।
রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক, আবু সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ, নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির, মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশ ও আরফান উল্লাহ দামাল।
এর মধ্যে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার হন দামাল আর ওমর ফারুকসহ বাকি চারজন গ্রেফতার হন র্যাবের হাতে।
এর আগে দামালকে অস্ত্র মামলায় ১ দিন রিমান্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছিল এবং মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশ এখন রিমান্ডে রয়েছেন।
শুনানিতে ওমর ফারুক, মোরশেদুল ও নাছিরের আইনজীবীরা দাবি করে বলেন, তাদের গ্রেফতার দেখানোর আগে র্যাব হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাই এখন প্রয়োজনে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।
আবু সালেহর আইনজীবী বলেন, ঘটনার সময় তার মক্কেল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আর দামালের পক্ষেও তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান সংবাদমাধ্যমকে জানান, কাঠগড়ায় দাঁড়ানো আসামিদের মধ্যে শুনানির সময় কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। তাদের কাঠগড়ায় গল্প করতে এবং একজনকে অন্যজনের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়।
উল্লেখ্য, গত ২৪ মার্চ রাত ১০টার দিকে জাহিদুল ইসলাম টিপু মাইক্রোবাসে করে শাহজাহানপুর আমতলা হয়ে বাসায় ফিরছিলেন। শাহজাহানপুরে পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এতে জাহিদুল ও তার গাড়িচালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় জাহিদুলের গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা বদরুন্নেসা কলেজের ছাত্রী প্রীতিও গুলিবিদ্ধ হন। তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাহিদুল ও প্রীতিকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় পরের দিন শুক্রবার (২৫ মার্চ) দুপুরে নিহত জাহিদুল ইসলাম টিপুর স্ত্রী ফারজানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে শাহজাহানপুর থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
যদিও প্রীতির বাবার বক্তব্য, ’মেয়ে হত্যার বিচার চাই না। মামলা চালানোর মতো অবস্থাও নেই। আমরা নিরীহ মানুষ। বিচার চাইলে আল্লাহর কাছে চাই। তিনিই বিচার করবেন।’