জামিনে বের হয়ে লাপাত্তা হচ্ছে জঙ্গিরা। গেলো কয়েকবছরে এ সংখ্যা প্রায় একশো। তাদের বেশকজন চলে গেছে দেশের বাইরেও।
কেউ আবার ফের সম্পৃক্ত হচ্ছে জঙ্গি কার্যক্রমেও। পুলিশ বলছে, জামিনে মুক্তি পাওয়া জঙ্গিদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে না পারার কারণেই এই পরিস্থিতি হচ্ছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব ঘটনা উদ্বেগের।
মো. সাইফুল ইসলাম ২০১৩ সালের ২৫শে আগস্ট জঙ্গি সম্পৃক্ততায় রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে থেকে গ্রেপ্তার হয়। প্রায় এক বছর পর কারাগারে থেকে জামিনে বের হওয়ার পর থেকেই লাপাত্তা। তথ্য নেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছেও।
২০১৭ সালে যাত্রাবাড়ি থেকে গ্রেফতার হওয়া তানজিল হোসেন বাবু আর ২০১৩ সালে বগুড়া থেকে আটক কামরুল ইসলামও জামিনে বের হয়ে এখন নিখোঁজ।
গোয়েন্দা তথ্য বলছে, জামিনের পর লাপাত্তা হওয়ার সংখ্যা একশোরও বেশী। কেউ কেউ চলে গেছে দেশের বাইরে। জামিনের পর লাপাত্তা হওয়ার কারণ যথাযথভাবে নজরদারী রাখতে না পারা।
ডিএমপি সিটিটিসির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘যে পর্যায়ে নজরদারী করা দরকার, ওই পর্যায়ে অনেক ঘনিষ্ট সুপারভীষন বা ঘনিষ্ট নজরদারী করা হয় না। সে যদি নিয়মিত এসে হাজিরা দেয়ও তার বাকি দিনগুলোর খবর কিন্তু আমরা জানি না, যতক্ষন পর্যন্ত তার আরেকটি অপরাধ ধরা পরছে।’
পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত আইজিপি কামরুল আহসান জানান, জামিনে এসে যাতে কেউ লাপাত্তা হতে না পারে সেদিকে সতর্ক হচ্ছেন তারা।
জামিনের পর ফের জঙ্গি কার্যক্রমে যুক্ত হওয়ার নজীরও কম নয়। রাজধানীর তুরাগ থেকে গত ১১ই মার্চ এন্টি টেররিজম ইউনিটের হাতে আটক হয়েছে ১০ বছেরের সাজাপ্রাপ্ত হুজি জঙ্গি শরিফুজ্জামান। সে ২০১৩ সালের আটকের পর জামিনে বের হয়ে আবারও জঙ্গিবাদে যুক্ত হয়।
আর সম্প্রতি কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের হাতে আটক হয়েছে পল্টনে পুলিশ বক্সে হামলা চালানো জঙ্গি বাছির। ২০১৮ সালে গ্রেপ্তারের পর ২০১৯ সালে জামিনে এসে আবারও জঙ্গি কার্যক্রম শুরু করেন।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, জামিনে বের হয়ে লাপাত্তা হওয়া জঙ্গিদের এমন চিত্র উদ্বেগের।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক এয়ার কমোডর (অব.) ইশফাক ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘সমাজের জন্য অবশ্যই এটা ভয়ঙ্কর। লাপাত্তা হয়ে যাচ্ছে, দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে সেটা আসলেই উদ্বেগজনক। তারা তাদের কার্যক্রম চালিয়েই যাবে, নতুন করে তারা সংগঠিত হবে। সুতরাং এগুলোর দিকে নজর রাখতে হবে।’