ইউক্রেনে পশ্চিমা দেশ থেকে অস্ত্রের চালান পাঠানো হলে তাতে হামলা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া। অন্যদিকে আলোচনায় প্রস্তুত থাকলেও ইউক্রেন আত্মসমর্পন করবে না বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এদিকে, ইউক্রেনে হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ এর আশেপাশের এলাকায় রুশ বাহিনীর সাথে ইউক্রেনীয় বাহিনীর চলছে তীব্র লড়াই। মুহুর্মুহু বিস্ফোরণে প্রকম্পিত হচ্ছে কিয়েভের আশপাশ।
বিবিসি জানায়, স্থানীয় সময় গত শনিবার রুশ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রায়াবকোভ বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠানোর প্রক্রিয়াটি খুবই বিপদজনক। এটা আমরা ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছি। সতর্ক করা হয়েছে, অস্ত্র সরবরাহের এসব বহর রুশ হামলার বৈধ লক্ষ্যবস্তু হতে পারে।
তিনি বলেন, ইউক্রেনের সেনাদের কাঁধে বহনযোগ্য আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, ট্যাংক ধ্বংস করার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করছে পশ্চিমারা। এসব ছোট ছোট অস্ত্রের স্থানান্তরের পরিণতি সম্পর্কে তাদের সতর্ক করা হয়েছে। তবে ওয়াশিংটন এ সতর্কতা খুব একটা আমলে নেয়নি বলেই মনে হচ্ছে।
এদিকে, যুদ্ধ বন্ধে ফ্রান্স ও জার্মানির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন।
এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট। রুশ প্রেসিডেন্টকে রাজি করাতে ইসরায়েল প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান তার।
কিয়েভের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলে বেড়েছে রুশ হামলা। থেমে থেমে শোনা যাচ্ছে বিস্ফোরণের শব্দ।
মার্কিন প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সার টেকনোলজিসের স্যাটেলাইটের ছবিতে দেখা গেছে, রুশ ট্যাংক, সাঁজোয়া যান ও কামানের ৪০ মাইলের দীর্ঘ বহর এক সপ্তাহ ধরে কিয়েভের উত্তরে স্থবির থাকার পর বেশিরভাগই কাছাকাছি শহর ও বনাঞ্চলের দিকে এগুচ্ছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির দাবি, শুক্রবার আত্মসমর্পণ করেছেন ৫শ থেকে ৬শ রুশ সেনা। রুশ আগ্রাসনের পর থেকে এ পর্যন্ত ১৩শ ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছেন।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ইউক্রেনে ১৭ দিনের অভিযানে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার সামরিক অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে।
রুশ সেনারা মেলিতোপোলের মেয়র ইভান ফেদেরভকে অপহরণের অভিযোগ ইউক্রেনের। এ ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
মেয়র অপহরণের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে রাশিয়ার লজ্জা হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন জেলেনস্কি। মেয়রের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছে শহরবাসী।
এদিকে, রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা বসার আগ্রহের কথা, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন জেলেনস্কি। বলেন, রুশ-ইউক্রেন প্রতিনিধি দল এরইমধ্যে বেশকিছু ইস্যুতে একমত হয়েছে। এখন সময় দুদেশের রাষ্ট্রপ্রধান পর্যায়ে আলোচনার। এজন্য জেরুজালেম উপযুক্ত স্থান হতে পারে।
এরইমধ্যে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনোলাপে অস্ত্রবিরতিতে সম্মতি জানাতে আহ্বান জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ও জার্মান চ্যান্সেলর। ম্যাখোঁর কার্যালয় বলছে, যুদ্ধ বন্ধে আগ্রহ দেখাননি পুতিন।