জীবিত সত্ত্বেও মৃতের তালিকায় নাম চলে যাওয়া আরও এক হাজারের বেশি নাগরিকের তথ্য রোল-ব্যাক করে পুনরায় তালিকাভুক্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়া রোল-ব্যাকের ক্ষমতা মাঠপর্যায়ের উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তাকে দিলেও এখনও ইসি সচিবালয়ে এই বিষয়ে আবেদন আসছেই। ইসি’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সংগে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গত সপ্তাহে এক হাজারের বেশি মৃত স্ট্যাটাসে থাকা নাগরিকের রোল-ব্যাক করা হয়। সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ হাজারের মতো রোল-ব্যাক করা হয়েছে। মৃত ভোটার হিসেবে এদের নাম কর্তন করা হয়েছিলো।
এর আগে গত ৮ আগস্ট ইসি’র সহকারি সচিব মো. মোশাররফ হোসেন স্বাক্ষরিত উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসারের কাছে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়, যেসব জীবিত ভোটারের স্ট্যাটাস ভুলক্রমে মৃত স্ট্যাটাস রয়েছে। সেগুলো রোল ব্যাক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রেশন অফিসারকে (উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসার) ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন, ভোটার এলাকা স্থানান্তরের মতো সংশ্লিষ্ট এলাকায় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, রেজিস্ট্রেশন অফিসাররা কার্ড ম্যানেজম্যান্ট সিস্টেম (সিএমএস) ব্যবহার করে রোল ব্যাক করতে পারবেন। এই ক্ষেত্র অবশ্যই নিশ্চিত হয়ে অনুমোদন করতে হবে।
রোল-ব্যাক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এছাড়া কোনো ভোটার যাতে হয়রানীর শিকার না হয়, সেই বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখতেও নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়।
ইসি’র সংশ্লিষ্ট শাখা জানায়, এতোদিন ডাটাবেইজে মৃত স্ট্যাটাসে রয়েছেন এমন জীবিত ভোটারদের তথ্য উপজেলা অফিস চিঠি দিয়ে জেলা নির্বাচন অফিসকে, জেলা অফিস জানায় আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসকে, আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস তথ্যগুলো সমন্বয় করে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে পাঠাতো। পরে কমিশনের অনুমোদন নিয়ে আইসিটি বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতো যা ছিলো সময় সাপেক্ষ। সম্প্রতি মাঠপর্যায়ে এই সমস্যার সমাধান করার সুযোগ দেওয়াতে নাগরিকদের ভোগান্তি কমে গেলো।
এই বিষয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের সিস্টেম ম্যানেজার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন জানিয়েছিলেন, উপজেলা/থানা ভিত্তিক কথা বলে, কীভাবে এটি ইন্সটল করতে হবে সেটি শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে রোল ব্যাক কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রেশন অফিসার (উপজেলা/থনা নির্বাচন অফিসার) করতে পারবেন।
সূত্র জানায়, ভোটার তালিকা থেকে কারো নাম বাদ দেওয়ার জন্য মৃত্যু সনদের সাপোর্টিং ডকুমেন্টসহ নির্ধারিত ফরমে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধির স্বাক্ষর থাকতে হয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এই কাজের জন্য দায়ী করা হয়। কারো বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলকভাবে জীবিত ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার প্রমাণ পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে থাকে কমিশন।
ইসি’র দেওয়া সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১১ কোটি ১৭ লাখ ২০ হাজার ৬৬৯ ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার পাঁচ কোটি ৬৫ লাখ ৯৮ হাজার পাঁচ জন, নারী ভোটার পাঁচ কোটি ৫১ লাখ ২২ হাজার ২২৩ জন ও ৪৪১ জন হিজড়া ভোটার রয়েছে।