সাড়ে তিনশ’ বছর ধরে বৃহস্পতির বুকে চলছে ভয়ংকর ঝড়!

1938
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতি। এতটাই বড় যে, অনেকে বলেন, এক বৃহস্পতির মধ্যে এক হাজারটি পৃথিবী অনায়াসে রাখা যাবে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, সূর্যের জন্মের পরপরই গ্রহগুলোর আবির্ভাব। আর সেটা ৪৬৫ কোটি বছর আগে। আর গ্রহদের মধ্যে সবার আগে জন্ম নিয়েছিল বৃহস্পতি।

বৃহস্পতি বা জুপিটারের বুকে সাড়ে তিন শতকজুড়ে চলছে ভয়ংকর ঝড়। আর সেই ঝড়ের গতি প্রতিনিয়তই বাড়ছে। যাকে ঘিরে বিস্ময়ের শেষ নেই বিজ্ঞানীদের। নতুন করে সেই ঝড়কে নজরবন্দি করেছে নাসার হাবল স্পেস টেলিস্কোপ।
দেখা যাচ্ছে, ২০০৯ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ৮ শতাংশ বেড়েছে ঝড়ের গতি, যা এখন বাড়তে বাড়তে এসে পৌঁছেছে ৬৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়।

সৌরজগতের যে ক’টি গ্রহকে ঘিরে বিজ্ঞানীদের কৌতূহল সবচেয়ে বেশি, তার মধ্যে অন্যতম বৃহস্পতি। আর বৃহস্পতির গ্রেট রেড স্পটের ওপর দিয়েই বয়ে চলেছে সেই ঝড়। এই অতিকায় অপার্থিব ঝড়ের ঘূর্ণনের এলাকা পৃথিবীর চেয়েও বড়।

কী এই গ্রেট রেড স্পট? একে বলা হয় সৌরজগতের সমস্ত ঝড়ের ‘রাজা’। ২০১৭ সালে বৃহস্পতির খুব কাছে এসেছিল মহাকাশযান জুনো। তখনই দেখা যায়, এই ঝড়ের কেন্দ্র বৃহস্পতির আবহাওয়ায় অন্তত ৩২০ কিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে আছে। পৃথিবীর ক্ষেত্রে তা ১৫ কিলোমিটারের বেশি হয় না। এর থেকেই অনুমান করা সম্ভব, পৃথিবীর সব ভয়ংকর ঝড়ও এর কাছে কার্যত কিছুই নয়।

১৮৩০ সালে, আজ থেকে প্রায় দুই শতক আগে প্রথম এই ঝড়ের সন্ধান পান জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। প্রায় সাড়ে তিনশ’ বছর ধরে ওই ঝড় চলছে। এই ধরনের দীর্ঘমেয়াদি ও ভয়ংকর ঝড় সৌরজগতের কোনো গ্রহেই দেখা যায়নি। সেই ঝড়েরই গতিবিধি ধরা পড়ল হাবলের তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণে। বিষয়টি ঘিরে উত্তেজিত বিজ্ঞানীরা।

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাইকেল ওয়ং হাবলের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে জানিয়েছেন, ”এটা হাবলের পক্ষেই করা সম্ভব।”

আসলে বৃহস্পতির বুকে বইতে থাকা এই ঝড়কে ঘিরে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের বরাবরের কৌতূহল। কিন্তু পৃথিবী থেকে ওই ঝড়কে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে হাবলের মতো শক্তিশালী টেলিস্কোপ ছাড়া উপায় নেই। আর তাই এই সাম্প্রতিক ছবি ঘিরে উচ্ছ্বসিত জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন