জিয়াউর রহমানের লাশ নিয়ে প্রশ্ন জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক : মির্জা ফখরুল

1950
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের সমাধিসৌধ ও মরদেহ প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘স্বাধীনতা ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সম্পর্কে যখন এ ধরনের কথা বলা হয়, তখন এটি আমাদের দুর্ভাগ্য ছাড়া কিছু না। পরিষ্কার কথায় বলতে চাই, জিয়াউর রহমান জাতির অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছেন।

এ ধরনের প্রশ্নের উত্তর দিতে নিজেকে ছোট মনে হয়, রুচিতে বাঁধে বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি মুক্তিযোদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেন, ‘উনাকে উনার নিজের চ্যালেঞ্জ নিতে বলেন। ওনি নিজে মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন কি না সেটা আগে প্রমাণ করুক।’

আজ বুধবার বিএনপির ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। এ সময় তিনি সমসাময়িক বিষয় নিয়েও কথা বলেন।

দেশে এখন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করাই বিএনপির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এখন বিএনপির সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, দেশে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা এবং গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা। আজকে ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে, পাঁচশর বেশি নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এই অবস্থার পরেও বিএনপি অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে নিজের পায়ের উপর দাঁড়িয়ে আছে।

দীর্ঘ ৪৩ বছরে বিএনপি বাংলাদেশের রাজনীতিতে আমূল ও মৌলিক পরিবর্তন এনেছে বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘বিএনপি দেশে একদলীয় স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তন করেছে। পরবর্তীতে গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী খালেদা জিয়াতে নেতৃত্বে রাষ্ট্রপতিশাসিত রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে সংসদীয় গণতন্ত্রিক ব্যবস্থা এসেছে। রাজনীতিতে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার ফলে বাকস্বাধীনতা, মৌলিক অধিকার এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল। সেগুলোকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্রের কাঠামো তৈরি করেছিলেন। আজকে বাংলাদেশের অর্থনীতির যেটুকু অগ্রগতি হয়েছে, তার ভিত শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাতেই স্থাপিত হয়েছে।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জাতি যে অধিকারগুলো অর্জন করেছিলো সেই অধিকারগুলো তারা হারিয়ে ফেলেছে। আজকে জনগণ ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দেশে নির্বাচন হয় না। নির্বাচন কমিশন একটি আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। পুরো প্রশাসনকে দলীয়করণ করা হয়েছে। বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করা হয়েছে। সার্বিক অর্থে ছদ্মবেশী একটা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা দেশে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।’

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দলের প্রতিষ্ঠাতার সমাধিতে আসতে নেতাকর্মীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে, বিধি-নিষেধ জারি করা হয়েছে- এমন অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আমাদের লজ্জা হয়, দুঃখ হয়। আজকে স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে আমরা যখন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে আসি তখন আমাদেরকে বাধা দেওয়া হয়। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর গুলি চালানো হয়। আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়। আজকে এখানে ৩০ জনের বেশি আসা যাবে না বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। এই এলাকায় নাকি আরও বড় নিরাপত্তা বলয়ে চলে গেছে। তারা সম্পূর্ণভাবে বাধার সৃষ্টি করছে।’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এডিসি) রুবাইয়াত জামান জানান, আজ জাতীয় সংসদের অধিবেশন রয়েছে। ফলে সে অনুযায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তবে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে চন্দ্রিমা উদ্যানে প্রবেশে কাউকে বাধা দেওয়া হয়নি। এমনকি চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির কতজন প্রবেশ করতে পারবে, তাও লিখিতভাবে কিছু বলা হয়নি।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন