মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় জামিনের পর চিত্রনায়িকা পরী মণি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। ১৯ দিন কারাগারে থাকার পর তিনি মুক্তি পেলেন।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুরের মহিলা কারাগার থেকে পরী মণি বেরিয়ে আসেন। এ সময় কারাফটকে গণমাধ্যম ও শত শত স্থানীয় উৎসুক জনতা ভিড় করে। একটি সাদা হুটখোলা গাড়িতে করে পরী মণিকে কারাগার থেকে আনতে যান তাঁর আইনজীবী ও স্বজনরা।
এ সময় পরী মণি গাড়িতে দাঁড়িয়ে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে হাত নাড়েন। মুক্তির পর খুবই হাস্যোজ্জ্বল দেখাচ্ছিল চিত্রনায়িকাকে। তিনি সাদা টি-শার্ট পরে ছিলেন। তাঁর মাথায় সাদা ওড়না পেচানো আর চোখে ছিল রোদচশমা। মাস্কও পরেছিলেন সাদা। গাড়িতে দাঁড়িয়ে তিনি সেলফি তুলেন। ভিড়ের মধ্যে কয়েকজন ভক্তের সঙ্গে হাতও মেলান। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীরা প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে পরী মণি শুধু বলেন, ‘থ্যাংক ইউ, ধন্যবাদ।’
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ পরী মণির জামিনের আদেশ দেন। যেহেতু তাঁর বিরুদ্ধে অন্য কোনো মামলা ছিল না, তাই মুক্তিতে কোনো বাধা ছিল না।
পরী মণি কারাগার থেকে মুক্ত হবেন এমন সংবাদে গতকালও বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কারাফটকে ভিড় করেছিলেন গণমাধ্যমকর্মী ও তাঁর ভক্তরা। কিন্তু তাদের হতাশ হতে হয়। কারণ, গতকাল জামিনের কাগজ-পত্র কারাগারে পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় তিনি মুক্তি পাননি। আজ সকাল জামিনের কাগজ-পত্র যাচাই-বাছাই শেষে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয় বলে কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
পরী মণি আজ যেকোনো সময় মুক্তি পাচ্ছেন এটা অনেকটা নিশ্চিতই ছিল। ফলে সকাল থেকে ফের কারাফটকে ভিড় করেন গণমাধ্যমকর্মী ও ভক্তরা। সকালে সাদা গাড়ি নিয়ে কারাগারে পৌঁছান তাঁর আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত, পরী মণির খালু জসীমউদ্দিনসহ অন্যরা। অন্যদিনের তুলনায় এদিন কারারক্ষীদের তৎপরতা ছিল বেশি। তারা ভিড় সমলাতে ব্যস্ত ছিলেন।
গত ৪ আগস্ট রাতে প্রায় চার ঘণ্টার অভিযান শেষে বনানীর বাসা থেকে পরী মণি ও তাঁর সহযোগী দীপুকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এ সময় পরী মণির বাসা থেকে বিভিন্ন মাদক জব্দ করা হয়। পরদিন ৫ আগস্ট র্যাব-১ বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পরী মণি ও তাঁর সহযোগীর বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করে।
এই মামলায় তিন দফায় রিমান্ড শেষে গত ২১ আগস্ট আদালতের নির্দেশে পরী মণিকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরদিন গত ২২ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে পরী মণির জামিন আবেদন করেন আইনজীবী মজিবুর রহমান। পরে আদালত জামিন বিষয়ে শুনানির জন্য ১৩ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন।
১৩ সেপ্টেম্বর জামিন শুনানির দিন ধার্য করার আদালতের সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক দাবি করে গত বুধবার হাইকোর্টে আবেদন করেন পরী মণি। পরদিন বৃহস্পতিবার পরী মণির নিম্ন আদালতে জামিন আবেদন অবিলম্বে শুনানি করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর নিম্ন আদালত জামিন শুনানির যে দিন নির্ধারণ করেছিলেন, তা কেন বাতিল করা হবে না মর্মে রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।