সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবি চলমান আন্দোলনে ব্লকেড কর্মসূচি প্রত্যাহার করতে শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বৃহস্পতিবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কোটা নিয়ে সরকারের অবস্থান তুলে ধরেন তিনি।
এ সময় শিক্ষার্থীদের জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী সকল প্রকার কর্মসূচি বন্ধ করে আদালতের নির্দেশনা মেনে অবিলম্বে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আবেগকে পুঁজি কোন মহল যদি দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়, তাহলে সরকারকে অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কোটাবিরোধী আন্দোলনকে বিএনপি সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ দিতে চায়। তাদের সে খায়েশ পূরণ হতে দিবে না আওয়ামী লীগ। কোটাবিরোধী অরাজনৈতিক এই আন্দোলনকে কেউ যদি রাজনৈতিক ফাঁদে ফেলতে চায়, তাহলে আমরা রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করব।’
দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়ে কাদের বলেন, ‘কোনো কোনো অশুভ মহল দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে ব্যাহত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’
আওয়ামী লীগের এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘গত পাঁচ বছরে কোটা না থাকায় নারীরা পিছিয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী। বৈচিত্র্যময়, সমতাভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গঠনে কোটার গুরুত্ব রয়েছে। কোটা কোন বৈষম্য নয়, বরং বৈষম্য নিরসনে কোটা প্রয়োজন কোনো কোনো ক্ষেত্রে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোটা নিয়ে দেশের উচ্চ আদালত চার সপ্তাহের স্থিতাদেশ দিয়েছেন। আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, আদালতের নির্দেশনার প্রতি কোন প্রকার সম্মান প্রদর্শন না করে তথাকথিত বাংলা ব্লকেড কর্মসূচির নামে মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপন আহত করার চেষ্টা চলছে। অন্যদিকে কোন কোন রাজনৈতিক দল তাদের রাজনৈতিক চরিতার্থের জন্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্ররোচনা দিচ্ছে। বিএনপি সহ কয়েকটি দল প্রকাশ্যেই কোটা আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে। কোটা বিরোধী আন্দোলনকে সরকার বিরোধী আন্দোলনের রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছে।’
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম প্রকাশ্যে বলেছেন মুক্তিযোদ্ধা কোটার দরকার নেই। এ থেকে বোঝা যায় বিএনপি’র মুক্তিযুদ্ধের প্রতি কোন সম্মানবোধ নেই। বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এটা মনে করার আর কোন কারণ নেই। দেশের সর্বোচ্চ আদালত সংবিধানের রক্ষক, আদালতের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। আন্দোলনের নামে জনগণের চলাফেরা, যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা বেআইনি।’