নিজস্ব প্রতিবেদক :
৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ইতিমধ্যে জাতীয় নির্বাচনের জন্য ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ২৯৮ জন প্রার্থী এবং জাপা ২৮৭ জন প্রার্থীর তালিকা ঘোষণা করেছে। এর মাধ্যমে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে নির্বাচনি আমেজ। তবে বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় ৩০০ আসনই উন্মুক্ত রাখার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ফলে দলের ২৯৮ আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হলেও নৌকা প্রতীক না পেয়ে প্রার্থীদের অনেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা ডামি প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। মনে করা হচ্ছে, বিএনপি এখনও নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে এমন কৌশল নিয়েছে আওয়ামী লীগ।
সময়ের আলোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে , আগামী সংসদ নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে নানা কৌশল নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এর প্রেক্ষিতে দলটি ২৯৮টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলেও সব আসন উন্মুক্ত রাখতে চায়। দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে যারা মনোনয়ন পাননি তাদের মধ্য থেকে অনেকে স্বতন্ত্র বা ডামি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। এতে করে বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরতে পারবে দলটি। এবার ২০১৪ সালের মতো কোনো আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত এমপি হওয়ার সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি নির্বাচিত হোক তা চাচ্ছেন না।
অন্যদিকে সারা দেশের প্রায় ১৯ জন উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আশায় চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। কিন্তু নৌকার মাঝি হতে পেরেছেন মাত্র তিনজন। বাকি ১৬ জন উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করায় পড়েছেন বিপাকে। এই ১৬ জন এখন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে চান। গত রোববার গণভবনে ৩ হাজার ৩৬২ জন দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীর সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি মনোনয়নপ্রত্যাশীদের উদ্দেশে বলেন, সবাইকে দল মনোনয়ন দিতে পারবে না। আমাদের ৩০০ জনকেই মনোনয়ন দিতে হবে। তাই মন খারাপ করা যাবে না। তবে এবার ৩০০ আসনই উন্মুক্ত থাকবে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগও থাকছে। প্রত্যেক আসনে ভানি প্রার্থীও রাখতে হবে। যাতে করে কোনো প্রার্থী বাদ গেলে তারা যেন নির্বাচন করতে পারে। সেই সঙ্গে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী নির্বাচিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে শহিদ ডা. মিলন দিবসে মিলনের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে গণমাধ্যমকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের পাশাপাশি দলের নেতাদেরই স্বতন্ত্র প্রার্থী (ডামি) হওয়ার অনুমতি দলের প্রয়োজনে কৌশলগত সিদ্ধান্ত। নতুন সময়ে নতুন কৌশলও দলকে গ্রহণ করতে হয়। এ সময়ে যে কৌশল দরকার, নেত্রী শেখ হাসিনা সে কৌশল ঠিক করেছেন। দলের অবস্থান অনুযায়ী, ভবিষ্যৎ নাথায় রেখে দলীয় নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেন এবং দেন। এর বাইরে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেই। মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) যে বক্তব্য দিয়েছিলেন প্রার্থীদের উদ্দেশে, সেখানে তিনি সবকিছু পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন। দলের সভাপতি যে গাইডলাইন দিয়েছেন, সেটা অনুসরণ করে প্রার্থী হতে বাধা নেই।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা স্বতন্ত্র প্রার্থী বা ভামি প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর এরই মধ্যে ঢাকা-৫ আসনের বর্তমান এমপি হারুন অর রশিদ মুন্না সেখানে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। কিন্তু এই একই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা-৫ আসনের প্রয়াত এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লার জ্যেষ্ঠপুত্র ও ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা সজল। তিনি বলেন, নেত্রী যেহেতু বলেছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে কোনো বাধা নেই। তাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হব। সোমবার থেকে তিনি পথসভা ও মতবিনিময় সভা শুরু করে দিয়েছেন।
কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-তিতাস) আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর। সেখানে বর্তমান এমপি অবসরপ্রাপ্ত মেজর সুবিদ আলী ভূঁইয়া দলীয় মনোনয়ন পাননি। কিন্তু সুবিদ আলী ভূঁইয়ার পুত্র মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আলী সুমন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘খেলা হবে ইনশাআল্লাহ। সবাই প্রস্তুত হোন। আমাদের পরিবার থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হব। এ ছাড়া এ আসনে মনোনয়ন পেতে দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন মোহাম্মদ আলী সুমন।
কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদ। কিন্তু বর্তমান এমপি জাফর আলম দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। গত রোববার রাতে তাকে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ায় সমর্থকরা চকরিয়ার চিরিঙ্গা রাস্তার মাথায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন।
পঞ্চগড়-১ আসনে বর্তমান এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মজহারুল হক প্রধান দলীয় মনোনয়ন পাননি। এ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন নাঈমুজ্জামান ভূঁইয়া (মুক্তার)। তার মনোনয়ন বাতিল ঢেয়ে সোমবার সংবাদ সম্মেলন করেছে পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এরপর তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।
নেত্রকোনা-১ আসনে (কলমাকান্দা-দুর্গাপুর) আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপত্র পেয়েছেন সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোশতাক আহমেদ রুহী। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন তুলেছিলেন জান্নাতুল ফেরদৌস ওরফে কুমা তালুকদার। তিনি দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করে দলীয় মনোনয়ন ফরম তোলেন। কিন্তু মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান হেলাল। এ আসনে বর্তমান এমপি নানা বিতর্বেদা জন্য দেওয়া ও সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান দলীয় মনোনয়ন কিনেও পাননি। কিন্তু তার জামালপুর-৪ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার গুঞ্জন উঠেছে। একই আসনে আরও দুজন স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। এদিকে তেজগাঁও থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আবদুর রশিদ মনোনয়ন না পাওয়ায় তার সমর্থকরা বাড়িঘর ঘেরাওসহ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। পৌরসভার ধানাটা ও আরামনগর বাজার এলাকায় এ কর্মসূচি করে ক্ষুদ্ধ সমর্থকরা। বিএনপি সমর্থিত একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীও মনোনয়ন বিনবেন বলে শোনা যাচ্ছে।
নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান এমপি ও নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম বকুল। বিন্তু এ আসনে নির্বাচনে স্বতন্ত প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করবেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ। সোমবার লালপুর উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে তার পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়।
ঝালকাঠি-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বজলুল হক হারুন। তার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির পরিচালক এম মনিরুজ্জামান মনির।
ঝালকাঠি-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমুর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির সদস্য ও দৈনিক সমাজ সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক মো. মিল্লাত হোসেন।
রাজশাহী-১ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন ওমর ফারুক চৌধুরী। রাজশাহী-১ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ দুই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। তিনি দলীয় মনোনয়ন না পেলে রাজশাহী-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে বর্তমান এমপি ও দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ. ক. ম. সরওয়ার জাহান বাদশাহ দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। কিন্তু এ আসনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক এমপি রেজাউল হক চৌধুরী।
মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন ডা. আবু সালেহ মো. নাজমুল হক সাগর। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেনসহ আরও অনেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষনা দিয়েছে।
চট্টগ্রাম-১২ আসনের সংসদ সদস্য ও বর্তমান সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী নানা ঘটনায় বেশ কয়েকবার বিতর্কের মুখে পড়েন। এবার তার বদলে ওই আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি পটিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে সম্প্রতি পদত্যাগ করেছেন। তবে মাঠ ছাড়ছেন না সামশুল হক। দলীয় মনোনয়ন না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে লড়ার কথা ভাবছেন তিনি।
এদিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মনজুর আলম। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১০ (হালিশহর-পাহাড়তলী-খুলশী) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন বন্যার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। সোমবার সন্ধ্যায় এই ঘোষণা দেন তিনি। গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইলেও এবার দলীয় ফরম সংগ্রহ করেননি সাবেক এ মেয়র।
সিলেট-৬ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কানাডা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সারোয়ার হোসেন। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, নেত্রীর নির্দেশনায় আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হব ইনশাআল্লাহ।
রাজবাড়ী-১ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লড়তে চান রাজবাড়ী সদর উপজেলায় টানা চারবারের চেয়ারম্যান ইমদাদুল হক বিশ্বাস। এ জন্য সম্প্রতি তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। নৌকার মনোনয়ন চেয়ে পাননি স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা সাহাবুদ্দিন আহমেদ চঞ্চল।
মানিকগঞ্জ-২ আসনে নিয়মিত রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মসূচি পালন করছেন তিনি। তার বাবা সামসুদ্দিন আহমেদ ওই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। সাহাবুদ্দিন আহমেদ এবার তাই স্বতন্ত্র হয়ে লড়বেন সেখানে। তার বিপক্ষে নৌকার প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম।
যশোর-২ (চৌগাছা-ঝিকরগাছা) আসনে এবার প্রথমবারের মতো মনোনয়ন পেয়েছেন চিকিৎসক তৌহিদুজ্জামান তুহিন। তিনি আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা তোফায়েল আহমেদের জামাতা। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম মনির। তিনি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে এ বিষয়ে সবার মতামত জানতে চেয়েছেন।
ফরিদপুর-৪ আসনে আবারও নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ। এর আগে তিনি পরপর দুবার নৌকা নিয়ে হেরেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান চৌধুরীর (নিক্সন) কাছে। বর্তমান সংসদ সদস্য ও যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নিক্সন এবারও নৌকা চেয়ে পাননি। তবে আগের মতোই থাকছেন ভোটের লড়াইয়ে।
ফরিদপুর-৩ সদর আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষনা দিয়েছেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ। সোমবার রাতে ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলিতে নিজ বাসভবনে সমর্থক ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ ঘোষণা দেন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা।
রংপুর-৬ আসনে আবারও নৌকা পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। নৌকা না পেয়ে ওই আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম। তিনি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ইতিমধ্যেই।
হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনে নৌকা ঢেয়ে পাননি আইনজীবী সায়েদুল হক সুমন। ইতিমধ্যেই ফেসবুকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বদাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। সায়েদুল হক সুমন নির্বাচনের কাজ শুরু করে দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন ফেসবুকের একাধিক পোস্টে।
চাঁদপুর-৪ আসনে আবারও মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক সংসদ সদস্য শামসুল হক ভূঁইয়া। তিনি চাঁদুপর-৩ আসন থেকেও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
চাঁদপুর-১ আসনে এবার নৌকা প্রতীক পেয়েছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম মাহমুদ। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক বাণিজ্যসচিব গোলাম হোসেন। চাঁদপুরের অন্য আসনেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে তোড়জোড় চলছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে নৌকা পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য মো. শাহজাহান আলম। ওই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লড়বেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা মঈনউদ্দিন মঈন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও দলের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডে সদস্য কাজী জাফর উল্ল্যাহ বলেন, আওয়ামী লীগ একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে চায়। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা তো বলে দিয়েছেন, কেউ যদি স্বতন্ত্র প্রার্থী হন তাতে কোনো সমস্যা নেই। এখানে শুধু আওয়ামী লীগের নেতারাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন বিষয়টি এমন নয়। বিএনপি নির্বাচনে না এলেও তাদের দলের অনেক নেতাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হবে। তাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে তো দোষের কিছু নয়। যার জনপ্রিয়তা বেশি তিনি নির্বাচিত হবেন।