নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি দিয়ে ‘সহিংসতা’ করায় বিএনপির ওপর মার্কিন ভিসা নীতি ‘প্রয়োগ করা উচিত’ বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি বলেন, অবস্থান কর্মসুচির নামে ঢাকার প্রবেশ পথ অবরোধ করা এটা কোন রাজনীতি, এটা কোন গণতন্ত্র ? নির্বাচনকে সামনে রেখে এধরনের কর্মসূচি স্পষ্ট নির্বাচনকে বাধা দেওয়া। তাই মার্কিন ভিসা নীতিতো তাদের ওপর কার্যকর হওয়া উচিত।
আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো বিদেশি দূত তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়নি। শেখ হাসিনার পদত্যাগ বা সংসদ ভেঙে দেওয়ার কথাও বলেনি। তাদের দাবি একটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। তাদের দাবি আমাদের দাবি এক। আমরাও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। আমাদের কারণে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ না হলে আমরা দায়ী থাকব। অন্যদের কারণে যদি শান্তিপূর্ণ না হয়, তারা দায়ী থাকবে।
তিনি বলেন, বিএনপি যে কোনো মূল্যে, যে কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ক্ষমতা থেকে শেখ হাসিনাকে হটাতে চায়, এটা তাদের টার্গেট। আমরা নির্বাচন চাই। নির্বাচনে জনগণ চাইলে থাকব আবারো, জনগণ না চাইলে আমরা বিদায় নেব। বিএনপির সঙ্গে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নে কাদের বলেন, আমরা কোনো উত্তেজনায় যাব না। আমরা নির্বাচন চাই। উত্তেজিত হলে তো আমাদের চলবে না, আমরা সরকারি দল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত কর্মসূচি নিয়ে আওয়ামী লীগ মাঠে থাকবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ১ আগষ্ট থেকে শোকের মাস। শোকের মাসের কর্মসূচির ধরণ ভিন্ন হবে, কর্মসূচিকে ঢেলে সাজাচ্ছি। কর্মসূচি আমরা ছেড়ে দিইনি। এটা তো একবার ঘোষণা হয়ে গেছে। নির্বাচন পর্যন্ত ছাড়াছাড়ি নেই, আমরা সতর্ক অবস্থানে মাঠে আছি।
বিএনপির কর্মসূচির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের উদ্দেশ্য হলো তারা একটা লাশ ফেলবে। তারেক জিয়া লন্ডন থেকে ভিডিওতে বলেছে একটা লাশ ফেললে ১০টা লাশ ফেলতে হবে। কি অ্যাটিচিউড! কি ভয়াল তাদের অ্যাটিচিউড! বিএনপির কর্মসুচিতে পুলিশের বাধা দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে কাদের বলেন, পুলিশের ওপর হামলা, পুলিশ তো বাধা দেবেই। ঢাকা-চট্টগ্রামের প্রবেশ পথের রাস্তা বন্ধ করে দেবে, পুলিশ চুপ করে থাকবে? পুলিশের দোষ দেব না, পুলিশের এটা দায়িত্ব মানুষের জানমাল রক্ষা করা। বিএনপি নেতারা দলের কর্মীদের ‘অতিরিক্ত জামা-কাপড় নিয়ে’ ঢাকা আসতে বলেছিলেন দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বেচারারা জামা-কাপড় নিয়ে থাকতে তো পারল না, ফিরে গেল। টাকাও শেষ, দুই হাজার টাকা করে দিয়েছিল।
ডিবি অফিসে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে আপ্যায়নের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করায় সমস্যার কিছু হয়নি মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, গোয়েন্দাদের কাজই তো এটা। যা সত্য, সেটা আসছে। উনি তো রুই মাছ দিয়ে খেলেন। উনি কেন খেলেন। এত ক্ষুধা! তিন দিন খাইনি আমরা, এমনও তো হয়েছে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কিছু পশ্চিমা দেশের কূটনীতিক এর সাম্প্রতিক বিবৃতির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, পৃথিবীর যে কোনো দেশে বিদেশিদের কার্যক্রমের একটা সীমানা আছে। ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী যদি চলে তাহলে তো আমাদের কিছু বলার নেই। আমরা কি তাদের সাথে গিয়ে মারামারি করব? আমরা তাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, আপনাদের এ কাজটা ভিয়েনা কনভেনশনের বিরুদ্ধে।