হয়রানি ছাড়াই মানুষ ভূমিসেবা পাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করাই বর্তমান সরকারের লক্ষ্য।
বুধবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী জাতীয় ভূমি সম্মেলনে বক্তব্য দেন তিনি।
দেশের মানুষের ভূমিসেবা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে; কোনো হয়রানি ছাড়াই মানুষ এখন ভূমিসেবা পাচ্ছে – এ কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করাই বর্তমান সরকারের লক্ষ্য। ক্ষমতায় আসার পর দেশসেবায় রূপকল্প ২০২১ গ্রহণ করা হয়, যা অত্যন্ত সফলভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
ভূমি মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ যা বলতে গেলে অবিচ্ছেদ অংশ। আমাদের দেশে ভূমি নিয়েই সামাজিক বা পারিবারিকভাবে হোক বা নানাভাবে অনেক সমস্যাও দেখা দেয়। ভূমি ব্যবহারে যে জটিলতা দেখা দিত সেটি সমাধানে উদ্যোগ নেয়া হয়। ভূমি নিয়ে যেসব সমস্যা আছে তা কীভাবে সমাধান করা যায়, সরকার গঠন করার পর থেকে কাজ করা হয়। সাথে সাথে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করা হয়। এজন্য ভূমি ব্যবহার নীতি ২০০১ প্রণয়ন করা হয়। ভূমি ব্যবহার নীতির মূল কারণ হলো ভূমি যাতে অহেতুক ব্যবহার না হয়, ফসল উৎপাদন করতে হবে, সেই ফসলি জমি যাতে নষ্ট না হয় আবার উন্নয়নও যেন বাধাগ্রস্ত না হয় সবদিক বিবেচনা করেই ব্যবহারভিত্তিক ল্যান্ড এবং সরকারের উদ্দেশ্যগুলো ভূমি ব্যবহার নীতি ২০০১ এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
ডিজিটাল ব্যবস্থার ফলে ভূমি খাতে প্রতিদিন ৫ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হচ্ছে এবং ৭৭০ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পারিবারিক দ্বন্ধ দূর ও ভোগাান্ত রোধে ভূমির বণ্টননামা ডিজিটালাইজ করা হয়েছে। আগামী পহেলা বৈশাখ ১৪৩০ থেকে সারা দেশব্যাপী ভূমি উন্নয়ন কর শতভাগ অনলাইনে আদায় করা হবে।
এদিন জাতীয় ভূমি সম্মেলন উদ্বোধনের পাশাপাশি ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাতটি নতুন উদ্যোগও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে ভূমি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমি মন্ত্রণালয়ের নানা সেবামূলক কার্যক্রম ও ভূমিসেবা ডিজিটাইজেশনের ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জগুলো খুঁজে বের করে তা মোকাবিলায় করণীয় নির্ধারণ করতে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
সম্মেলনটি চলবে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত। জাতীয় ভূমি সম্মেলনের অন্যান্য লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়ের গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে নাগরিকদের জানানো, সরকারি সংস্থা, অংশীজনদের জানানো, তাদের মধ্যে ভূমি ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা এবং ভূমি সংক্রান্ত বিদ্যমান আইন ও বিধিবিধান সম্পর্কে ধারণা দেয়া।
সাতটি উদ্যোগের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে জাতির পিতার স্মৃতিবিজড়িত লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে স্থাপন করা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্মৃতিস্তম্ভ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব গুচ্ছগ্রাম কমপ্লেক্স। বাকি ছয়টি উদ্যোগ হলো: রেজিস্ট্রেশন-মিউটেশন আন্তঃসংযোগ, স্মার্ট ভূমি নকশা, স্মার্ট ভূমি রেকর্ডস, স্মার্ট ভূমি পিডিয়া, স্মার্ট ভূমিসেবা কেন্দ্র ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দিন বিকেলে ও পরবর্তী দুদিন ‘স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনায় মাঠ প্রশাসন’, ‘সায়রাত ও খাসজমি ব্যবস্থাপনা’, ‘অধিগ্রহণ ব্যবস্থাপনা, সরকারি মামলা ও সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাপনা’ এবং ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল জরিপ’ শীর্ষক চারটি সেমিনার বা প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনের কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশনে।