উৎসবের দিনে বিশ্বজুড়ে পণ্যের দাম কমে, এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যতিক্রম বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বুধবার (১৫ মার্চ) রাজধানীতে ভোক্তা অধিকার দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, দয়া করে নায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি করুন। আর রোজায় ক্রেতা-ভোক্তাদের সংমযী হতে আহ্বান জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
রমজানকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীদের সংযমী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে নানা উৎসবে অনেক ছাড়ের ব্যবস্থা থাকে। তারা অল্প লাভ করেন। আমাদের দেশে তার উল্টো। সামনে রমজান মাস, আপনারাও একটু সংযমী হোন। অল্প লাভ করুন।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে দেশের বাজারে বেশকিছু পণ্যের দাম বেশি। আর এ সংকটে কিছু সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ী অবৈধভাবে পণ্য মজুত করে বাজার আরও অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর থাকতে হবে বলে মন্তব্য করে তিনি।
সঠিক মূল্যে পণ্য বিক্রির বিষয়ে বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলো রমজানে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে। পণ্য কেনার পর ভোক্তাকে বিক্রির রসিদ দিতে হবে। রসিদ না দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়টি যথাযথভাবে তদারকি করা হবে।’
এদিকে ভোক্তারা যেন একসঙ্গে পুরো মাসের পণ্য না কেনেন, সে বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর প্রতি জোর দিয়েছেন টিপু মুনশি। তিনি বলেন, ‘রমজান মাসের চাহিদা মেটানোর জন্য প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি পণ্য মজুত রয়েছে। পণ্য সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই। কোনো পণ্যের ঘাটতি নেই। সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। ভোক্তারা যদি চাহিদার বেশি পণ্য না কেনেন ও একবারে এক মাসের পণ্য না কেনেন তাহলে বাজারে পণ্যের ওপর কোনো চাপ পড়বে না।’
পাশাপাশি পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে সরকার চেষ্টা করছে বলে উল্লেখ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, গুটিকয়েক ব্যবসায়ীর হাতে বাজার জিম্মি। নেই কার্যকর প্রতিযোগিতা। ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করতে সুশাসন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের তাগিদ দেন তিনি। আরও বলেন, ভোক্তা অধিকার রক্ষায় সরকারের সক্ষমতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই।
বক্তারা এতে অভিযোগ করেন, রোজা আসছে, বাড়ছে ছোলা ও তেলসহ নিত্যপণ্যের দাম। ডলারের দামও চড়া। যার প্রভাব পড়ছে বাজারে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ না নেয়া হলে সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন ও কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশনের অব বাংলাদেশের সভাপতি গোলাম রহমান। এছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদফতারের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান স্বাগত বক্তব্য রাখেন।