ব্রয়লার মুরগিতে ‘স্বাস্থ্যঝুঁকি’, মিলেছে ক্ষতিকর ভারি ধাতুর উপস্থিতি

1003
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

ব্রয়লার মুরগির মাংস ও হাড়ে অতিরিক্ত মাত্রার ক্ষতিকর নিকেল, ক্রোমিয়াম, সীসা ও আর্সেনিকের মতো ক্ষতিকর চারটি ভারি ধাতুর উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে, এগুলো মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। সম্প্রতি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের এক গবেষণায় এ বক্তব্য উঠে এসেছে। এ অবস্থায় ব্রয়লার মুরগির অর্ধ সিদ্ধ মাংস না খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণে এ মুহূর্তে বেশি ভূমিকা রাখছে ব্রয়লার মুরগি। ক্রয় ক্ষমতা সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে হওয়ায় বেড়েছে এর চাহিদাও। তবে সাম্প্রতিক এ গবেষণায় মিলেছে উদ্বেগজনক তথ্য। ব্রয়লার মুরগির মাংস ও হাড়ে মিলেছে অতিরিক্ত মাত্রার ক্ষতিকর নিকেল, ক্রোমিয়াম, সীসা ও আর্সেনিক।

তাশরীফ আহমেদ নামে খুবির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী খুলনা সিটি করপোরেশনের পাঁচটি বাজারের ব্রয়লার মুরগি ও ১৫টি কোম্পানির মুরগির খাবারের ওপর গবেষণা করেন।

গবেষণার তথ্য মতে, ট্যানারি বর্জ্য দিয়ে তৈরি নিম্নমানের ও দ্রুত বর্ধনশীল খাবার খাওয়ানো হয় ব্রয়লার মুরগিকে। ফলে এর মাংস ও হাড়ে পাওয়া গেছে মাত্রা অতিরিক্ত চারটি ক্ষতিকর ধাতু, যা মানবদেহের জন্য চরম হুমকির।

খুবির পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী তাশরীফ জানান, শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে ‘এসেসমেন্ট অব হেভি মেটালস ইন ব্রয়লার চিকেন অ্যান্ড ইটস সোর্স ট্র্যাকিং ইন খুলনা সিটি করপোরেশন এরিয়া’ শিরোনামে সম্প্রতি একটি গবেষণা পত্র তৈরি করেন। এ জন্য তিনি নগরীর ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজার, রূপসা ঘাট, বয়রা বাজার, নিউমার্কেট কাঁচা বাজার ও নিরালা বাজার থেকে ব্রয়লার মুরগি কিনে ল্যাবে নিয়ে যান। এরপর ব্রয়লার মুরগির মাংস ও হাড় নিয়ে গবেষণা করেন। এতে দেখা গেছে, অতিরিক্ত মাত্রার ক্ষতিকর নিকেল, ক্রোমিয়াম, সীসা ও আর্সেনিক, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি।

খুবি পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরী বলেন, ট্যানারি বর্জ্য দিয়ে তৈরি নিম্নমানের ও দ্রুত বর্ধনশীল খাবার খাওয়ানোর কারণে ব্রয়লার মুরগিতে মিলেছে মাত্রা অতিরিক্ত এ চারটি ক্ষতিকর ধাতু। এগুলো মানবদেহের জন্য চরম হুমকির। কাজেই এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকি প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ বলেন, ব্রয়লার মুরগি অর্ধ সিদ্ধ করে কিছু খাবার তৈরি করা হয়; যেগুলো খাওয়া মানবদেহের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তবে ব্রয়লার মুরগি ভালোভাবে সিদ্ধ, ফ্রাই অথবা রান্না করে খাওয়া হলে ঝুঁকি থাকে না। সেজন্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে অর্ধ সিদ্ধ মাংস খাওয়া চলবে না।

উল্লেখ্য, গত বছর ফেব্রুয়ারিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদা তিনটি গবেষণায় তেলাপিয়া মাছ, চিংড়ি ও ঘেরের পাশের সবজিতে মিলেছে ক্ষতিকর এসব ভারি ধাতু।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন