বিমানবাহিনী এখন অনেক বেশি শক্তিশালী, আধুনিক ও চৌকস: প্রধানমন্ত্রী

1191
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৭৪ সালে জাতির জনকের তৈরি করা প্রতিরক্ষা নীতিমালার ভিত্তিতে ফোর্সেস গোল প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করছে সরকার। ফলে অবকাঠামো, রণকৌশল ও প্রযুক্তির দিক থেকে আজকের বিমান বাহিনী আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী, আধুনিক ও চৌকস।

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) সকালে যশোরে শীতকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী।

করোনা মহামারি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞায় সারাবিশ্বেই মন্দা দেখা দিয়েছে। তবে এ মন্দা থেকে যেন উত্তরণ ঘটাতে পারি, সেজন্য আমরা যথেষ্ট সজাগ আছি। আমাদের অর্থনীতি যথেষ্ট গতিশীল ও নিরাপদ আছে বলেও জানান সরকার প্রধান।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই, সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ নীতিতে বিশ্বাস করি। কিন্তু তারপরও দক্ষতার দিক থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আমাদের উৎকর্ষতা বজায় রেখে চলতে হবে।

এর আগে বিমান বাহিনীর ৮১তম বাফা কোর্স ও ডিরেক্ট অ্যান্ট্রি কোর্সের কমিশন প্রাপ্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যশোর বিমান বাহিনী একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ শেষে বক্তব্য দেন তিনি।

বাংলার আকাশ শত্রুমুক্ত রাখতে বিমান বাহিনীর সক্ষমতা ক্রমেই আরও গতিশীল ও সমৃদ্ধ হচ্ছে। কঠোর পরিশ্রম আর নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে তারা দেশ মাতৃকার সেবায় নিজেকে প্রস্তুত করে থাকেন। দীর্ঘ প্রশিক্ষণের পর নবীন কিছু চৌকস ক্যাডেট বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ৮১তম বাফা কোর্স এবং ডিরেক্ট অ্যান্ট্রি কোর্সের কমিশন লাভ করেছেন। অনুষ্ঠানে কৃতিত্বের সঙ্গে মৌলিক উড্ডয়ন প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করা বিমান বাহিনীর অফিসারদের ফ্লাইং ব্যাজ পরিয়ে দেয়ার পাশাপাশি তাদের হাতে সম্মানসূচক তরবারি তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে কুচকাওয়াজ ছাড়াও বিমান বাহিনী একাডেমির বিভিন্ন প্রকার বিমানের সমন্বয়ে একটি আকর্ষণীয় ফ্লাইপাস্ট অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকেও প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান জানানো হয়।

এদিকে বিকেলে যশোরের জনসভায় ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। প্রায় আড়াই বছর পর জেলা পর্যায়ে তার রাজনৈতিক এ জনসমাবেশকে ঘিরে যশোরে সাজসাজ রব, প্রস্তুত মঞ্চও। ‘যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় তাদের রুখে দেয়ার’ বার্তা দিতে প্রস্তুত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। যশোরের জেলা স্টেডিয়ামে এ জনসমাবেশে যোগ দেয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

করোনার কারণে দীর্ঘ প্রায় আড়াই বছর কোনো জেলা সফরে যেতে পারেননি আওয়ামী লীগ প্রধান। এ সময় হয়নি কোনো জনসভাও। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতির মাঠ যখন উত্তপ্ত হয়ে উঠছে, তখন আবারও জনসমাবেশমুখী ক্ষমতাসীন দলের প্রধান।

সবশেষ পাঁচ বছর আগে যশোরে জনসমাবেশ করেন শেখ হাসিনা। তাকে স্বাগত জানাতে পুরো শহরের পাশাপাশি সেজে উঠেছে জেলা স্টেডিয়াম। এ জনসভাকে ঘিরে কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও নেতারাও তৎপর। জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে ব্যাপক লোকসমাগমের মাধ্যমে শো-ডাউনের পাশাপাশি দলীয় প্রধান নির্বাচন কেন্দ্রিক বার্তাও দেবেন বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।

প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত একেকটি প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নে এখন বদলে গেছে যশোরের আদিরূপ। এককালের সন্ত্রাসের জনপদে সদর্পে মাথা তুলে দাঁড়ানো শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক এখন সম্পূর্ণ চালু হয়েছে। শুধু তাই নয়, ভারত-বাংলাদেশের অন্যতম বড় গেটওয়ে হিসেবে খুলনা-যশোর-বেনাপোল মহাসড়কও নির্মিত হচ্ছে নতুন করে। প্রথম ডিজিটাল জেলার খেতাব পাওয়া এ জনপদের অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরটিও এখন আধুনিকায়নের অপেক্ষায়। প্রস্তাবিত রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা, ফাউন্ড্রি ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক নির্মাণযজ্ঞসহ একগুচ্ছ প্রকল্প এখন বাস্তবায়নের অপেক্ষায়।

জনসভার মঞ্চটি নৌকার আদলে নির্মাণ করা হয়েছে। যশোরের এ জনসভার মধ্যদিয়ে শুরু হচ্ছে আওয়ামী লীগ প্রধানের দেশব্যাপী নির্বাচনী প্রচারাভিযান। এরপর তিনি ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের পলো গ্রাউন্ডে এবং ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারের শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দলীয় সভাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে জনসভায় ভাষণ দেবেন। এসব জনসভায় দলীয় সভাপতি তার ভাষণে জনগণের পাশাপাশি দলীয় নেতা-কর্মীদেরও নতুন বার্তা দেবেন।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন