মরুর বুকে আজ থেকে শুরু ফুটবলের মহারণ

1095
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

৩২ দেশের এই মহারণ ঘিরে বিশ্বজুড়ে ফুটবল প্রিয় মানুষের উত্তেজনা তুঙ্গে। আর মাত্র কয়েকঘণ্টা। রোববার মরুর দেশ কাতারে শুরু হচ্ছে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে আলোচিত ও আকর্ষণীয় ইভেন্ট বিশ্বকাপ ফুটবল।

ফুটবল বিশ্বকাপ সর্বপ্রথম অনুষ্ঠিত হয় ১৯৩০ সালে । প্রথম বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল লাতিন আমেরিকার দেশ উরুগুয়ে। এরপর থেকে প্রতি চার বছর পরপর অনুষ্ঠিত হচ্ছে ফুটবলের এ বিশ্বযুদ্ধ। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে ১৯৪২ এবং ১৯৪৬ সালে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়নি।

এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশিবার ফুটবল বিশ্বকাপ শিরোপা জয় করেছে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। পাঁচবার বিশ্বসেরার ট্রফি নিজেদের ঘরে তুলেছে সেলেসাওরা। এছাড়া চারবার করে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে জার্মানি এবং ইতালি।

এক যুগ আগে ২০১০ সালে ২০২২ বিশ্বকাপ আয়োজক হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারের নাম ঘোষনা করেছিল বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রন সংস্থা ফিফা। ঐ সময় তৎকালীন ফিফা সভাপতি সেপ ব্লাটার কাতারের নাম ঘোষনা করতে গিয়ে বেশ গর্ববোধ করেই বলেছিলেন প্রথম কোন আরব দেশ হিসেবে কাতারের বিশ্বকাপ ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

কাতারের প্রচন্ড গরমের কথা বিবেচনা করে প্রথমবারের মত জুন-জুলাই থেকে সড়িয়ে টুর্ণামেন্ট নভেম্বর-ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। একইসাথে টুর্ণামেন্টে পরিধি কমিয়ে এনে ২৯ দিনে শেষ করা হচ্ছে। আগামী ১৮ ডিসেম্বর কাতারের জাতীয় দিবসে টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।

চার বছর ধরে অপেক্ষার যে পালা, তা শেষ হবে রোববার বাংলাদেশ সময় রাত ১০ টায়। কাতারের আল বাইত স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হবে স্বাগতিক দেশ কাতার এবং লাতিন আমেরিকার অন্যতম শক্তিশালী দল ইকুয়েডর।

বিশ্বকাপ ঘিরে বাংলাদেশের মানুষ দুই ভাগে বিভক্ত। মেসির আর্জেন্টিনা ও নেইমারের ব্রাজিলকে ঘিরেই এই জনপথের মানুষের সর্বাধিক আগ্রহ। অন্য কিছু দলর সমর্থক থাকলেও তা ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার তুলনায় নগণ্য।

কাতার বিশ্বকাপে অংশ নেয়া ৩২টি দেশের মধ্যে ২৪টি দেশই চার বছর আগে রাশিয়ায় খেলেছে। ১৯৩৪ সালে ইতালির পর আয়োজক দেশ হিসেবে একমাত্র কাতার প্রথমবারের মত বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেয়েছে। নেদারল্যান্ড, ইকুয়েডর, ঘানা ও ক্যামেরুন রাশিয়ায় খেলতে ব্যর্থ হবার পর আবারো বিশ্বমঞ্চে ফিরেছে।

১৯৮৬ সালে একমাত্র বিশ্বকাপ খেলা কানাডা ৩৬ বছর পর ফিরে এসেছে। অন্যদিকে ইউরোপীয়ান দল হিসেবে ১৯৫৮ সালের ৬৪ বছর পর দ্বিতীয় বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে ওয়েলস। ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ১০ দলের মধ্যে একমাত্র বাদ পড়েছে ষষ্ঠ স্থানে থাকা ইতালি। এনিয়ে দ্বিতীয়বারের মত বিশ্বকাপে খেলতে ব্যর্থ হলো আজ্জুররিা। সর্বনিম্ন ৬১তম র‌্যাঙ্কে থেকে মাঠে নামবে ঘানা।

শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে দামী এই ট্রফি কাদের হাতে উঠবে তা দেখতে অপেক্ষা করতে হবে এক মাস। ১৮ডিসেম্বর ফাইনালের পরই পাওয়া যাবে কাতারজয়ী দলটির নাম। স্বাগতিক কাতার বিশ্বকাপ জেতার সম্ভাব্য দেশগুলোর তালিকায় না থাকলেও আয়োজক হিসেবে দেশটি কতদূর যেতে পারে তাও আলোচনায় রয়েছে।

৩২টি দেশ বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছে ৮ গ্রুপে ভাগ হয়ে। ‘এ’ গ্রুপে স্বাগতিক কাতারের সঙ্গে আছে ইকুয়েডর, নেদারল্যান্ডস ও সেনেগাল। ‘বি’ গ্রুপের ইংল্যান্ডের সাথে আছে ওয়েলস, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র। ‘সি’ গ্রুপের দলগুলো হচ্ছে-আর্জেন্টিনা, সৌদি আরব, পোল্যান্ড ও মেক্সিকো।

‘ডি’ গ্রুপের চার দল হচ্ছে- ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, ডেনমার্ক ও তিউনেসিয়া। ‘ই’ গ্রুপে আছে স্পেন, জার্মানি, কোস্টারিকা ও জাপান। ‘এফ’ গ্রুপের চার দল হচ্ছে- বেলজিয়াম, কানাডা, মরোক্কো ও ক্রোয়েশিয়া। ‘জি’ গ্রুপের দলগুলো হচ্ছে- ব্রাজিল, সার্বিয়া, সুইজারল্যান্ড ও ক্যামরুন। ‘এইচ’ গ্রুপে আছে পর্তুগাল, ঘানা, উরুগুয়ে এবং দক্ষিণ কোরিয়া।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন