মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ, চিঠি হস্তান্তর
বাংলাদেশ সীমান্তে হামলার ঘটনায় চতুর্থবারের মতো মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াউ মোকে ডেকে ব্যাখ্যা চেয়েছে ঢাকা। রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হাজির হন।
কিছুক্ষণ অপেক্ষা করিয়ে রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার অণু বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক নাজমুল হুদার দফতরে ডেকে নেয়া হয়। এ সময় বাংলাদেশ সীমান্তে একের পর এক হামলার ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়ে কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে তাকে একটি চিঠি হস্তান্তর করা হয়।
পরে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ত্যাগ করেন।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু নোম্যানস ল্যান্ডে রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় মিয়ানমারের মর্টার শেল নিক্ষেপে ইকবাল নামে এক রোহিঙ্গা নিহত হন। এছাড়া ওই ঘটনায় এক শিশুসহ পাঁচ রোহিঙ্গা নাগরিক আহত হন। তারা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তার আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার ভূখণ্ড থেকে ছোড়া একটি গুলি বাংলাদেশ সীমান্তের তুমব্রু এলাকায় এসে পড়ে। এর আগে ৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকায় পড়ে। তার আগে ২৮ আগস্ট বিকেলের দিকে মিয়ানমার থেকে নিক্ষেপ করা একটি মর্টার শেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় ঘুমধুমের তুমব্রুতে এসে পড়ে।
এসব ঘটনায় বাংলাদেশকে যুদ্ধের ফাঁদে ফেলার অপচেষ্টা চলছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, মিয়ানমারে অবস্থানরত বাকি ছয় লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়ার পাঁয়তারা করছে দেশটি। আর এ কারণেই হেলিকপ্টার এবং যুদ্ধবিমান দিয়ে বাংলাদেশের আকাশসীমা লঙ্ঘনের পর উসকানিমূলকভাবে মর্টার শেল নিক্ষেপ করছে।
এ প্রসঙ্গে রোহিঙ্গাবিষয়ক গবেষক প্রফেসর ড. জাকির হোসেন চৌধুরী বলেন, ইচ্ছাকৃতভাবে তারা মর্টাল শেল নিক্ষেপ করছে। একটা চাপ সৃষ্টি করে তারা চায় বাকি রোহিঙ্গারাও যেন বাংলাদেশ বা অন্য কোথাও চলে যায়। এছাড়া উস্কানি দেয়া হচ্ছে যে বাংলাদেশ যেন যুদ্ধে জড়ায়। এতে রোহিঙ্গা নির্যাতন আরও বেড়ে যাবে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম বলেন, ‘সীমান্তে তারা মাইন পুঁতেছে। তারা চূড়ান্তভাবে আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি লঙ্ঘন করছে। তারা বারবার আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করছে। অতীতে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়নি বলে তারা আবারও আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি লঙ্ঘন করার দুঃসাহসটা দেখাচ্ছে।’