কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: আমাদের নতুন সময় পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি ও স্থানীয় দৈনিক কুষ্টিয়ার খবর পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেল হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে সাংবাদিক মহাসমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার ১০ সেপ্টেম্বর বিকাল ৩ টায় কুষ্টিয়ার পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে এই মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার আয়োজনে এই সাংবাদিক মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ও দেশ বরেণ্য সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল । এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে- বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি আফরোজা আক্তার ডিউ, যুগ্ম মহাসচিব হেদায়েৎ হোসেন মোল্লা, কোষাধ্যক্ষ খায়রুজ্জামান কামাল, নির্বাহী
সদস্য সোহেল রানা, শাহাবুদ্দিন আলম, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়ন – জেইউজে’র সাধারণ সম্পাদক এইচ আর তুহিন, গোপালগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সৈয়দ মুরাদুল ইসলাম, মেহেরপুরের তুহিন অরন্য (নিউজ ২৪ টিভি), মাহবুবুল হক পোলেন (বাংলাদেশ প্রতিদিন), চুয়াডাঙ্গার হুসাইন মালিক (নাগরিক টিভি), ফরিদপুরের এমএ মুহিত হাসান আরিফ (সংবাদ সারাবেলা), বিমান পোদ্দার (মোহনা টিভি), দৈনিক কুষ্টিয়ার কাগজ পত্রিকার সম্পাদক ও এসএ টিভির কুষ্টিয়া প্রতিনিধি নূর আলম দুলাল, চ্যানেল ২৪ এর ষ্টাফ রিপোর্টার শরীফ বিশ্বাস, ইন্ডিপেনডেন্ট টিভি ও আজকের প্রত্রিকার কুষ্টিয়া প্রতিনিধি মিলন উল্লাহ, এটিএন নিউজ এর কুষ্টিয়া প্রতিনিধি শরিফুল ইসলাম, দৈনিক ইত্তেফাকের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি মোস্তাফিজুর রহমান মঞ্জু, এনটিভির কুষ্টিয়া প্রতিনিধি সাবিনা ইয়াসমিন শ্যামলী, দৈনিক সত্যখবর পত্রিকার সম্পাদক ও এশিয়ান টিভির
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি হাসিবুর রহমান রিজু, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি গোলাম মওলা, দীপ্ত টিভির কুষ্টিয়া প্রতিনিধি দেবেশ কুমার সরকার, ভয়েস অফ কুষ্টিয়ার সম্পাদক মুন্সী শাহিন, নিহত রুবেলের চাচা মিজানুর রহমান মেজর, দৌলতপুর রিপোর্টার ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রনি আহমেদ, ভেড়ামারা প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিরুল ইসলাম, দৌলতপুর প্রেসক্লাব ডিপিসির সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ কায়সার, কুমারখালী প্রেসক্লাবের তানভির লিটন, খোকসা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ হোসেন, দৈনিক প্রতিজ্ঞার সম্পাদক নুরুন্নাহার সীমা প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, অবিলম্বে সাংবাদিক রুবেলের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও তাদের বিচার করতে হবে। যে সময় সাংবাদিকরা দেশের উন্নয়ন তুলে ধরে লেখালেখি করার দরকার সেই সময় তারা রাজপথে সহকর্মীর হত্যার বিচরের দাবীতে আন্দোলন করতে হচ্ছে। এটা একটি পূর্ব পরিকল্পিত হত্যাকান্ড এবং একটি চক্র এই হত্যাকান্ডকে ধামাচাপা দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের সরকারের মুখোমুখি করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। তাই অবিলম্বে রুবেল হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারের জোর দাবী জানাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের চরম ব্যর্থতা হত্যার দুই মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও এই হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত এমন কাউকে আটক করতে পারেনি। আসলে পুলিশ হত্যাকারীদের ধরতে পারছে না নাকি ধরতে চাইছে না এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির সহায়তায় সব কিছু সম্ভব। কিন্তু পুলিশ এই হত্যাকান্ড নিয়ে কেন ব্যার্থ হচ্ছে সেটা খতিয়ে দেখা দরকার। অবিলম্বে সাংবাদিক রুবেল হত্যার আসামীদের গ্রেফতার অন্যথায় দেশব্যাপী আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়া হবে। এই সমাবেশ জাতীয় প্রেসক্লাবে
অনুষ্ঠিত হবে।
সাংবাদিক নেতারা বলেন, অবিলম্বে এই হত্যাকান্ডে রহস্য উম্মোচিত না করলে আগামী দিনে আরো বৃহৎ আন্দোলনের কর্মসুচি দেয়া হবে। এসময় সাংবাদিক রুবেলের মা সহ পরিবারের সদস্য, কুষ্টিয়া জেলার ছয় উপজেলার প্রেসক্লাব, রিপোটার্স ইউনিটিসহ জেলার সর্বস্তারের ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার শত শত সাংবাদিক সমাবেশে অংশগ্রহন করেন।
উল্লেখ্য, গত ৩ জুলাই রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের সিঙ্গার মোড়ে নিজ পত্রিকা অফিসে ছিলেন হাসিবুর রহমান রুবেল। তখন মোবাইল ফোনে একটি কল পেয়ে অফিস থেকে বের হয়ে যান। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। তাঁর মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তাঁর ছোট ভাই মাহাবুব। সাংবাদিক হাসিবুর রহমান কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এ ব্লকের হাবিবুর রহমানের ছেলে। রুবেল জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি স্থানীয় দৈনিক কুষ্টিয়ার খবর পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এবং আমাদের নতুন সময় পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন।
সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি বিএডিসিতে ঠিকাদারি ব্যবসাও করতেন। নিখোঁজের চার দিন পর বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) দুপুরে কুমারখালী পৌরসভার তেবাড়িয়া এলাকায় নির্মাণাধীন গোলাম কিবরিয়া সেতুর নিচে গড়াই নদী থেকে হাসিবুরের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পরদিন শুক্রবার রাতে হাসিবুর রহমানের চাচা মিজানুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে কুমারখালী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। সেই মামলার কোনো অগ্রগতি না থাকায় বিভিন্ন সময় কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন মানববন্ধনসহ নিয়েছেন বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি দেনন। সেই সকল কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে এই মামলার তেমন কোন অগ্রগতি না থাকায় ডাক দেওয়া হয় এই সাংবাদিক মহাসমাবেশের এমনটাই দাবি স্থানীয় সাংবাদিক নেতাদের।