ডিজেলে বিদ্যুৎ উৎপাদন স্থগিত করে মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) থেকে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ে যাচ্ছে দেশ। পাশাপাশি জ্বালানি তেলের খরচ সাশ্রয়ে সোমবার (১৮ জুলাই) থেকেই সপ্তাহে একদিন পেট্রল পাম্প বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী, মুখ্যসচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সিনিয়র সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বৈঠকে বিদ্যুতের ঘাটতি দূর করতে সরকারি-বেসরকারি অফিস ভার্চুয়ালি করারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া অফিস-আদালতের সময় কমানো নিয়েও আসতে পারে নতুন সিদ্ধান্ত।
বৈঠক শেষে তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, সোমবার (১৮ জুলাই) থেকেই ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন স্থগিত করার পাশাপাশি মঙ্গললবার থেকে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং শুরু হবে। বিশ্ব পরিস্থিতির উত্তরণ হলে আগের অবস্থানে ফিরে আসা হবে।
এছাড়া সরকারি-বেসরকারি অফিস ভার্চুয়ালি করারও সিদ্ধান্ত হয়েছে সভায়। সরকারি অফিসগুলো ভার্চুয়ালি পরিচালনার ক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সমন্বয় করবে। অন্যদিকে সরকারি-বেসরকারি অফিসের সময় এক থেকে দুই ঘণ্টা কমিয়ে আনার চিন্তাও করা হচ্ছে; তবে এখনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি।
সরকারি অফিসগুলোতে কীভাবে সময় কমিয়ে আনা যায়, সেটাও ভাবা হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস।
এর আগে গত মঙ্গলবার (১৪ জুন) বিদ্যুৎ ভবনে বাংলাদেশ পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট (বিপিএমআই) আয়োজিত এক কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছিলেন, বিশ্ববাজারে দাম বেশি হওয়ায় দেশের বাজারেও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর চিন্তা করছে সরকার।
তিনি বলেন, মূল্য সমন্বয় নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। তবে এখনো কিছু নির্ধারিত হয়নি।
নসরুল হামিদ বলেন, যেভাবে বিশ্বব্যাপী জ্বালানির দাম বাড়ছে সেটা খুব অস্বাভাবিক। আমাদের চিন্তা করতে হবে এ অবস্থা কত দিন চলবে। বিপিসি প্রতিদিন শতকোটি টাকা লোকসান গুনছে। দাম পরিবর্তন করব কি না, কোথায় সমন্বয় করব বা আদৌ করব কি না; এসব বিষয় নিয়ে চিন্তা করছি। এরপর সরকারের কাছে প্রস্তাব করব।
লোকসানের দায় কে নেবে? প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, আমাদের গ্রাহকরা আছেন, যারা জ্বালানি পরিবহন করেন তাদের ওপর কোনো চাপ পড়ুক তাও আমরা চাই না। আমরা চাই সমন্বয় করতে। সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। বিপিসি প্রতিদিন শতকোটি টাকা লোকসান গুনছে। আমরা আসলে কতটা এই লোকসান করব?
আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটেও জ্বালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সারের দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। বাজেটে বলা হয়েছে, করোনার পর হঠাৎ চাহিদা বাড়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য বেড়েছে। এর সঙ্গে গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রায় সব পণ্যের দামই বাড়তে শুরু করেছে।