ডিজেল, ফার্নেস ওয়েল, অকটেনসহ কয়েক রকম জ্বালানি আমদানি করে বাংলাদেশ। এক বছরের ব্যবধানে বিশ্ববাজারে ডিজেলের দাম দ্বিগুণ ছাড়িয়েছে। বেড়েছে অন্যান্য জ্বালানির দামও। এসব আমদানিতে প্রতি মাসে ৪০ থেকে ৪৫ মিলিয়ন ডলারের ১৬ থেকে ১৭ টি ঋণপত্র খুলতে হয়। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন রাষ্ট্রীয় চার বাণিজ্যিক ব্যাংক ও তিনটি বেসরকারি ব্যাংকে এসব লেনদেন করে। তবে ডলারের চাহিদা মেটাতে না পারায় গত তিন মাস ধরে আমদানি বিল পরিশোধ ও এলসি খোলায় গরিমসি করছে ব্যাংকগুলো।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) বলছে, বড় অংকের আমদানি বিল পরিশোধেও বারবার বিলম্ব হচ্ছে। এতে জ্বালানি তেল বিক্রেতাদের কাছে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। অন্যদিকে, বিলের নিশ্চয়তা পেতে নতুন শর্ত দেয়ায় সরবরাহকারীর তালিকা থেকে বাদ দিতে হয়েছে চীনা এক তেল কোম্পানিকে।
এবিষযে বিপিসির চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ বলেন, ব্যাংকগুলো ডলার সমস্যার কারণে (এলসি খুলতে) বিলম্ব করছে। অনেক সময় পার্টলি পেমেন্ট করছে। যেটা হয়ত একদিনে হতে পারে সেটা হয়ত পাঁচদিনে/সাতদিনে হচ্ছে।
এ অবস্থা দীর্ঘায়িত হলে ‘সরবরাহকারীদের আস্থা নষ্ট হয়ে জ্বালানি নিরাপত্তায় বিঘ্ন’ সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা তার।
রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, অগ্রণী, রূপালী ও জনতা ব্যাংক ছাড়াও বেসরকারি ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, ওয়ান ও ইস্টার্ন ব্যাংকের মাধ্যমে এলসি খুলে থাকে বিপিসি। এরমধ্যে বেশির ভাগ কার্যক্রম হয়ে থাকে সোনালী ও অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে।
জ্বালানি তেল জাহাজীকরণের পর ৩০ দিনের মধ্যে বিল পরিশোধ করতে হয়। বিপিসি সময়মতো টাকা জমা দিলেও ব্যাংকগুলো ডলার সংকটে তা ক্লিয়ার করতে পারছে না। সংকট তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়, অর্থবিভাগসহ উচ্চ পর্যায়েও দফায় দফায় চিঠিও দিয়েছে বিপিসি।
এদিকে জ্বালানির মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার সরবরাহ অব্যাহত রাখবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর নসরুল হামিদ।
দেশের চাহিদা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৩৫ থেকে ৪০ দিনের জ্বালানি তেল মজুত করতে পারে বিপিসি। যার প্রায় শতভাগই আমদানি নির্ভর। এর মধ্যে বাংলাদেশ মূলত অপরিশোধিত তেল কেনে সৌদি আরবের সৌদি অ্যারামকো এবং আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি থেকে।
আর পরিশোধিত তেল সরবরাহ করে কুয়েত, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, চীন, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ও ভারতের আটটি কোম্পানি। এর মধ্যে চীনের কোম্পানি দুটি।