তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দুর্যোগ-দুর্বিপাকে মানুষের পাশে নেই বিএনপি। তারা শুধু বাগাড়ম্বরে আছে। সোমবার (২০ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকরা বন্যা নিয়ে বিএনপির বিভিন্ন মন্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি এ কথা বলেন।
ড. হাছান বলেন, রাজনীতি মানুষের কল্যাণ, দেশ ও সমাজের সেবার জন্য। কিন্তু বন্যার মধ্যেও বিএনপি নেতারা ঢাকার নয়াপল্টন, প্রেসক্লাব, দলীয় কার্যালয়ে বসে শুধু বিবৃতি দেয়, বাগাড়ম্বর করে। তারা দুর্গতদের পাশে নেই। এখন হয়তো আমাদের বক্তব্যের পর তারা কিছু ফটোসেশন করবে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে মানুষের পাশে দাঁড়াবে না। অপরদিকে আমাদের নেতাকর্মীরা বন্যা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গবন্ধুকন্যার নির্দেশে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। মানুষের জন্য প্রাণ দিয়েছে।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন, বিএনপির নেতারা করোনাকালেও মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি। তখনও আমাদের দলের নেতাকর্মীরাই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল। ত্রাণ তৎপরতায় এবং স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী বিতরণে আমাদের দলের নেতাকর্মীরাই ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সে কারণে মন্ত্রিসভার সদস্যসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ৮১ জন সদস্যের মধ্যে ৫ জন, উপদেষ্টামণ্ডলীর অনেকে এবং সংসদ সদস্যও মৃত্যুবরণ করেছে। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীরা দুর্যোগ-দুর্বিপাকে মানুষের পাশে দাঁড়ায় না। তারা করোনাকালে শুধু ফটোসেশন করেছে।
যেকোনো দুর্যোগ-দুর্বিপাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্ঘুম রাত কাটান উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আরো আট-১০ দিন আগে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বলেছিলেন, এবার দেশে বন্যা হতে পারে। উনি আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ নন, তবুও তার সাধারণ জ্ঞান থেকেই তা বলেছিলেন।
তিনি বলেন, দেখা গেলো, একদিনে এক হাজার মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এই বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনের সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সেনাবাহিনীকে কাজে লাগিয়েছেন। আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছিলেন বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর।
ড. হাছান বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা নিজেরাই বন্যাপ্লাবিত। বন্যার মধ্যে নিজেদের ঘরবাড়িই ডুবে গেছে। তবুও প্রশাসনের পাশাপাশি তারা বন্যার্তদের পাশে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। আপনারা বিভিন্ন গণমাধ্যম, সামাজিক গণমাধ্যমে দেখেছেন, টেলিভিশন চ্যানেলগুলোও সেই রিপোর্ট করেছে। পানি ঠেলে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে। ছাত্রলীগের একজন নেতা বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।
পদ্মা সেতু নিয়ে বিএনপির নানা মন্তব্যের বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, পদ্মা সেতু তো তাদের জন্য যন্ত্রণা। বিএনপি-জামায়াত এবং যারা পদ্মা সেতুর বিরোধিতা করেছিল, তাদের জন্য তো একটি যন্ত্রণা-জ্বালার বিষয়। কারণ, এই পদ্মা সেতু হোক তারা চায়নি। সুতরাং এই পদ্মাসেতু হয়ে যাওয়াতে জ্বালা আর উদ্বোধন হলে আরো বড় জ্বালা।
তিনি বলেন, বিরোধিতাকারীরা চায় না পদ্মা সেতু উদ্বোধন হোক। উদ্বোধন বানচাল করার জন্য তারা নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করেছিল। অনেক ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করা হয়েছে। সেই জ্বালা থেকেই তারা এসব কথা বলে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার পদ্মা সেতু উদ্বোধনের জন্য কোনো উৎসব করছে না। জনসভা ও উদ্বোধন অনুষ্ঠান করছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হলে শুধু দু’পাড়ের মানুষের যোগাযোগ, ব্যবসা-বাণিজ্যই বৃদ্ধি পাবে না। বন্যা মোকাবিলা করতেও সহায়ক হবে।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নির্মিত হওয়ায় সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ আজকে উল্লসিত। সমগ্র দেশের মানুষ একে শুধু সেতু হিসেবে নেয়নি। এই সেতু আমাদের জাতির সক্ষমতার, সম্মানের, মর্যাদার প্রতীক। জননেত্রী শেখ হাসিনার সক্ষমতার প্রতীক, তার নেতৃত্বাধীন সরকারের সক্ষমতার প্রতীক। ২৫ জুন সেখানে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে।