দাম বৃদ্ধি নয় বরং ভর্তুকি, অপচয় রোধ আর অযৌক্তিক ব্যয় কমানোর মাধ্যমে গ্যাস-বিদ্যুৎ খাতের ঘাটতি সমন্বয়ের প্রস্তাব দিল কনজ্যুমারস অ্যাসোয়িয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। তবে দাম না বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিতে পারেননি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী। আশ্বাস দেন, দাম সমন্বয় হলেও রাখা হবে সহনীয় পর্যায়ে।
জ্বালানি তেলের দামবৃদ্ধির পর অন্য দুই সেবা পণ্য গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়াতেও চলছে তোড়জোড়। গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাসের দাম ১১৭ শতাংশ বাড়াতে মার্চে, আর পাইকারি বিদ্যুতের দাম ৬৬ শতাংশ বাড়াতে গত মাসে হয়ে গেল গণশুনানি। আইন অনুযায়ী, গণশুনানির ৯০ দিনের মধ্যে দাম বাড়ানোর বিষয়ে বিইআরসির আদেশ ঘোষণার কথা।
এমন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (২ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দাম না বাড়িয়ে গ্যাস-বিদ্যুৎ খাতের ঘাটতি সমন্বয়ের বিকল্প প্রস্তাব তুলে ধরে ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাব। প্রস্তাবনায় কর রেয়াত, অযৌক্তিক ব্যয় কমানো, গ্যাস উন্নয়ন ও জ্বালানি নিরাপত্তা তহবিলের যথাযথ ব্যবহার, অপচয় রোধ, গ্যাস চুরি প্রতিরোধ, বিদ্যুৎকেন্দ্রের দক্ষতা বৃদ্ধিসহ কৌশলগত ও নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এ খাতকে সাশ্রয়ী করার পরামর্শ দেয়া হয়।
আর গ্রাহক পর্যায়ে দাম না বাড়িয়ে গ্যাসখাতে ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা, ও বিদ্যুতে ৫ হাজার ৭৯ কোটি ভর্তুকির মাধ্যমে ঘাটতি সমন্বয়ের প্রস্তাব করে ক্যাব।
জ্বালানি খাতে নিজস্ব সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার ও অনুসন্ধানে জোর না দেয়ায় নীতিনির্ধারকদের সমালোচনা করে বিশেষজ্ঞরা। বলেন, আমদানি নির্ভরতা বাড়াচ্ছে ব্যয় আর সংকট।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বদরূল ইমাম বলেন, দ্রব্যমূল্যের যাঁতাকলে এমনিতেই সাধারণ মানুষের দুঃসময়, তার ওপর জ্বালানির দামবৃদ্ধি হবে বাজারে দাবানলের শামিল। একই সঙ্গে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আগামী নির্বাচনকেও বিবেচনায় রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
তবে দাম না বাড়ানোর বিষয়ে ক্যাবের প্রস্তাবে সায় দিতে পারেননি জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী। বললেন, জ্বালানি দাম ঠিক রাখতে হিমশিম খাচ্ছে সারাবিশ্বই। তবে দাম বাড়লেও সহনীয় রাখার আশ্বাস দেন নসরুল হামিদ।
এদিকে, জুন মাসেও কমল এলপিজির দাম। ১২ কেজির দাম ৯৩ টাকা কমিয়ে জুন মাসে ১ হাজার ২৪২ টাকা ঠিক করেছে বিইআরসি।