অগ্রাধিকার প্রকল্পের নতুন তালিকা করছে সরকার। আগামী অর্থবছরে এমন দেড়শ প্রকল্পের জন্য খোঁজা হবে বিদেশি ঋণ। যার ৪৭টিই পরিবহন খাতের। পরিকল্পনা বিভাগ বলছে, ছোট অবকাঠামো নির্মাণের হিড়িক থামাতে হবে। সরাসরি অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে এমন প্রকল্পে বিনিয়োগে আগ্রহী সরকার। তবে বিদেশি ঋণ না পেলে এসব প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কি হবে তা নিয়ে প্রশ্ন গবেষকদের।
ডলারের নতুন দামে বিপদ বেড়েছে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পে। ৫ বছর আগে প্রকল্প অনুমোদনের সময় মুদ্রাটির দর ছিল ৮০ টাকা। এখন তা বেড়ে দাড়িয়েছে ৮৯ টাকায়। ফলে চীনের ঋণে প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা থাকলেও ডলারের এই বাড়তি দর মেটাতে হবে বাংলাদেশকে। এতে খরচ হবে আরও ৬৫১ কোটি টাকা।
ডলারের লেনদেন নিয়ে জটিলতার মাঝেই ১৫০টি নতুন প্রকল্পের জন্য বিদেশি ঋণ খুঁজছে সরকার। যা বাস্তবায়নে দরকার প্রায় ৩ লাখ ৭৭ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪৭টি পরিবহন ও যোগাযোগ খাতের। পরের অবস্থানে গৃহায়ন ও কমিউনিটি সুবিধা। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের নতুন প্রকল্প ২৪টি।
তালিকায় আছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম দ্রুতগামী রেলরুট, ভাঙ্গা-বেনাপোল ফোর লেন মহাসড়ক, বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক, কালিয়াকৈর ই-ওয়েস্ট প্ল্যান্ট ও বাপবিরোর পোল মাউন্টড বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের আধুনিকায়ন প্রকল্পের নাম। এসব নিয়ে আলোচনা চলছে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা ও এআইআইবির সাথে। দ্বিপাক্ষিক ঋণে আগ্রহ দেখিয়েছে ভারত, চীন ও কোরিয়া।
তবে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব আগামী ২-৩ বছর থাকবে। তাই যেকোনো পরিকল্পনার কাজ ভেবেচিন্তে নিতে হবে হবে।
অর্থায়ন না পেলেও, এডিপির বইয়ে প্রকল্প রাখার রেওয়াজ দীর্ঘদিনের। চুক্তি সই না হওয়া পর্যন্ত এসব উদ্যোগের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। তবে সরকারের অগ্রাধিকার বুঝলে এসব প্রকল্পে আগ্রহ থাকে বিদেশি সহযোগীদেরও। প্রশ্ন হচ্ছে, এত ঋণের ধাক্কা কিভাবে সামলাবে বাংলাদেশ?
সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, আমি বিদেশি ঋণে নেয়া প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে পারি কিনা তার ওপর নির্ভর করছে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে কি হবে না। এর বাইরে থাকে গ্রান্ড, কিছু ছোট প্রকল্প এবং বাজেট। বাজেটের বিষয়ে সরকার আলোচনা করছেন। এ বিষয়ে আশাবাদী আমরা।
জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের বাজেটে আড়াই লাখ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দিতে পারে সরকার।