ইউক্রেনকে আরও ১৩০ কোটি ডলার অর্থ সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সহায়তা প্যাকেজের আওতায় ৮০ কোটি ডলারের অস্ত্র ও সরকার পরিচালনার জন্য আরও ৫০ কোটি ডলার নগদ অর্থ রয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) পৃথক ঘোষণায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন এ ঘোষণা দেন। খবর রয়টার্সের।
হোয়াইট হাউসে দেয়া এক ভাষণে ইউক্রেনে ৮০ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা দেয়া হবে বলে ঘোষণা করেন বাইডেন। এ সময় তিনি বলেন, এ সহায়তা প্যাকেজে থাকবে ভারী অস্ত্রশস্ত্র, ১ লাখ ৪৪ হাজার রাউন্ড গোলাবারুদ ও বেশ কিছু কৌশলগত ড্রোন।
একই দিন ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস স্মিহাল ও অর্থমন্ত্রী সেরহি মারশেঙ্কোর সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন। বৈঠক কালে আরও ৫০ কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। মার্কিন অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, ইউক্রেনের সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের বেতন, ভাতা ও যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয় রোধে এ সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ঘোষণার দু’দিন আগে (২২ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় মস্কো।
অর্থ সহায়তা ঘোষণার পাশাপাশি যুদ্ধের কারণে পালিয়ে আসা ১ লাখ ইউক্রেনীয়কে আশ্রয় দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বাইডেন। আশ্রিতরা যুক্তরাষ্ট্রে ২ বছরের জন্য থাকতে পারবেন। তবে তাদের নাগরিকত্ব দেয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে।
শুক্রবার এ অভিযান ৫৬তম দিনে গড়িয়েছে। এ সময়সীমার মধ্যে এর আগে ইউক্রেনে কয়েক দফায় শত শত কোটি ডলারের সামরিক ও অর্থ সহায়তা পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
দনবাসের কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী বন্দরনগরী মারিউপোল দখলে নিয়েছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগু এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তবে মারিউপোলে রুশ নিয়ন্ত্রণের দাবি নাকচ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তিনি বলেন, এখনও শত শত ইউক্রেনীয় যোদ্ধা আজভস্তাইল ইস্পাত কারখানায় লুকিয়ে আছেন।
শহরটির মেয়র ভাদিম বইচেঙ্কো বলেছেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত মারিউপোলের লক্ষাধিক বেসামরিক নাগরিকের জীবন এখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের হাতে। তাদের নিয়ে এখন কী করা হবে তা কেবল পুতিনই নির্ধারণ করতে পারেন।
মারিউপোলের মেয়র ভাদিম বইচেঙ্কো বলেন, ‘এটি বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, মারিউপোল শহরে এখন আটকে থাকা মানুষের ভাগ্য কেবল একজন ব্যক্তির হাতে। আর তিনি হচ্ছেন ভ্লাদিমির পুতিন। এখন থেকে যেসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটবে তাও তার (পুতিনের) হাতে।’ বইচেঙ্কো আরও বলেন, ‘শহরকে মুক্ত বা স্বাধীন করার কোনো পরিকল্পনাই ছিল না (রুশ সেনাদের)। পরিকল্পনা ছিল কেবল ধ্বংসের।’