সরকার পতন আন্দোলন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং ‘জাতীয় সরকার’ গঠনের খসড়া রূপরেখা ও কর্মসূচি তৈরি করছে বিএনপি। দলটি জানিয়েছে, ঈদুল ফিতরের পর এনিয়ে সরকারের বিরোধী সমমনা সকল দলের যাবে তারা।
বিভিন্ন সভা সমাবেশে দলের সিনিয়র নেতারা বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি সরকারবিরোধী যে বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐক্য গড়ার চেষ্টা করছে, তার ভিত্তিমূল হবে ‘নির্বাচনোত্তর জাতীয় সরকার’ ধারণা। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন নয়, এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোকে নীতিগত ঐক্যের মধ্যে আনাই হবে মূল লক্ষ্য। এরপর তাদের নিয়ে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের কাঠামো এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার কৌশল ঠিক করা। এর ধারাবাহিকতায় নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ‘জাতীয় সরকার’ গঠন এবং ঐকমত্যের ভিত্তিতে কর্মসূচি নির্ধারণ।
গত ২৯ মার্চ লন্ডনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এক অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জাতীয় সরকারের নতুন ধারণার কথা উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ফলাফলে বিএনপিসহ আন্দোলনকারী দলগুলো যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়, তাদের সবাইকে নিয়েই জাতীয় সরকার গঠিত হবে। নির্বাচনে মিত্রদলগুলো জিতলেও সরকারে থাকবে, হারলেও থাকবে।
দীর্ঘদিন ধরেই ২০ দলীয় জোটের শরীক লিবারেল পেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি’র চেয়ারম্যান কর্ণেল অলি আহমেদও জাতীয় সরকারের কথা বলে আসছিলেন। একই সুর ছিলো জেএসডির আ স ম রবেরও। বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, আন্দোলন, নির্বাচন এবং নির্বাচনোত্তর জাতীয় সরকারকে কেন্দ্র করেই একটি খসড়া তৈরি করা হচ্ছে। যেখানে সংবিধান, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও সরকারি কর্মকমিশনসহ (পিএসসি) রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর বড় আঙ্গিকে সংস্কারের অঙ্গীকার থাকবে।
লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, ‘নির্বাচনে জিতলে আমরা জাতীয় ঐকমত্যের সরকার প্রতিষ্ঠা করবে তাঁর দল। ছোট দলের যোগ্য নেতাদেরও জাতীয় সরকারে নেয়ার কথা বলেছেন।’
সরকারবিরোধী সব পক্ষকে নিয়ে একটি বৃহত্তর ঐক্য গঠনের লক্ষ্যে বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা ২০-দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলোর পাশাপাশি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাসদসহ অন্তত ৩০টি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠকের প্রভাব মাঠ পর্যায়ে দেখা যায়নি। কিন্তু জাতীয় সরকার নিয়ে কিছুটা দ্বিধা রয়েছে। জাতীয় সরকার কখন হবে নির্বাচনের আগে না পরে।