পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের ওপর রায় আবারও পিছিয়েছে। মঙ্গলবার দ্বিতীয়দিনের মতো এ বিষয়ে শুনানি হলেও রায় ঘোষণা হয়নি। শুনানি বুধবার পর্যন্ত মুলতবি করেছেন সর্বোচ্চ আদালত।
পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি উমর আতা বন্দিয়াল বলেছেন, সুপ্রিমকোর্ট রাষ্ট্র ও পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে কোন হস্তক্সেপ করবে না। কেবলমাত্র জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের রায়ের বৈধতা নির্ধারণ করবে।
গত রবিবার পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব বাতিল করলে দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়ে ওঠে। বিরোধীদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ডেপুটি স্পিকার অসাংবিধানিকভাবে অনাস্থা ভোট বাতিল করেছেন।
এদিকে পার্লামেন্ট ভেঙে তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনের ঘোষণা দিলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভোট আয়োজনে অপারগ বলে জানিয়েছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। আইনি বাধ্যবাধকতাসহ ভোট আয়োজনে অন্তত ছয়মাস সময় লাগবে বলে জানিয়েছে কমিশন।
এদিকে শুনানিকে সামনে রেখে পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেছেন পিটিআই সমর্থকরা।
মঙ্গলবার পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে অনাস্থা ভোট বাতিলের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন দেশটির প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল, বিচারপতি মুনীব আখতার, বিচারপতি আইজাজুল আহসান, বিচারপতি মাজহার আলম ও বিচারপতি জামাল খান মন্দোখেল।
শুনানিতে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ স্পিকারের কাউন্সেল নাঈম বোখারিকে গত ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত অধিবেশনের কার্যবিবরণী উপস্থানের নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি।
শুনানির শুরুতে বিরোধী দল পিপিপির সিনেটর রাজা রাব্বানী তার যুক্তি উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, এটি একটি বেসামরিক অভ্যুত্থান। বিভ্রান্তিকর অভিযোগের মাধ্যমে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে।
পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব গত ২৮ মার্চ উত্থাপন করা হয়েছিল, কিন্তু এরপর জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করা হয় বলেও উল্লেখ করেন রাব্বানী।
পিপিপি সিনেটর অভিযোগ করেন, পার্লামেন্টে উপযুক্ত নথিপত্র জমা না দিয়েই অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব বাতিল করেছেন কাসিম সুরি। তিনি বলেন, ডেপুটি স্পিকারের রুলিং অবৈধ। ভোট না হলে অনাস্থা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা যায় না।
গত রোববার ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব আনলে সেটি খারিজ করে দেন স্পিকার। এরপর প্রেসিডেন্টের কাছে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তার প্রস্তাবে পার্লামেন্টে ভেঙে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি।