দীর্ঘ যানজটে নাভিশ্বাস নগরবাসীর। কোন কিছুতেই কমছেনা বরং দিনদিন বাড়ছেই। এতে করে নষ্ট হচ্ছে কর্মঘন্টা এবং মানবজীবন। যানজট নিরসনে পরিকল্পনা এবং মহাপরিকল্পনার কথা বলা হলেও অবস্থা সেই গোজামিল।
এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রয়োজন নগর সরকারের। সেই সঙ্গে বাড়াতে হবে সড়ক, কমাতে হবে ব্যক্তিগত গাড়ী।
থেমে আছে গাড়ীর চাকা। আধাঘন্টার সড়ক কতক্ষণে পাড়ি দেওয়া যাবে তা অনিশ্চিত। দুই সপ্তাহ ধরেই চলছে এমন। নগরীর বেশিরভাগ সড়কে অসহনীয় যানজট। কেন হচ্ছে এমন?
পরিসংখ্যান বলছে, একটি আধুনিক নগরীর আয়তনের ২০ থেকে ২৫ ভাগ সড়ক থাকা দরকার। কিন্তু ঢাকায় আছে মাত্র ৭ থেকে ৮ ভাগ। তার আবার ৭০ ভাগ ব্যক্তিগত গাড়ির দখলে, যাতে চলাচল করেন মাত্র ৫ থেকে ৬ ভাগ ব্যক্তি।
নগরবিদ অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, ‘ট্রান্সপোর্টেশন একট জটিল বিজ্ঞান। এই ডাইনামিক টাস্ককে একটা সমাধান দিলে দুই বছর পর আবার এটা থাকবে না। ছোট ছোট অধিক গাড়ি থেকেই এত বড় যানজটের শুরু হয়।’
যানজট কমাতে দুই সিটি বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা বললেও কাজে আসছেনা কিছুই। বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়হীনতা, অপরিকল্পিত সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি, একই রাস্তায় দ্রুত ও ধীর গতির যানবাহন চলাচল, শহরের মধ্যে রেলওয়ের লেভেল ক্রসিং, ভিআইপিদের চলাচল, সেখানে সেখানে পার্কিং- সব মিলিয়ে অবস্থা তৈরি হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রাজধানী শহরে ৩০ থেকে ৪০ ধরনের যানবাহন চলাচল করে। কোনো কোনো যানবাহনের গতি ঘন্টায় ৫ কিলোমিটারের কম, কোনোটা আবার ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত তোলা সম্ভব। এমনিতেই নগরবাসীর চলাচলের মত রাস্তা নেই। তারপর আবার বেশির ভাগ রাস্তায় উন্নয়নমূলক কাজ হওয়াতে আমরা আরও অসহায় হয়ে পরেছি।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ছাড়া উন্নয়ন কর্মকান্ড কোনো কাজে আসবেনা। আর এ ক্ষেত্রে নতুন শহর তৈরির বিকল্প নেই।
নগরবিদদের মতে, ফুটপাত দখলমুক্ত করে হাঁটার সড়ক বাড়াতে হবে। তাছাড়া, ভূমি ব্যবহারের নীতি সঠিকভাবে মেনে অবকাঠামো তৈরি না করলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই যান চলাচলের একেবারেই অযোগ্য হয়ে পড়বে ঢাকা।