সঠিক কর্ম পরিকল্পনা না থাকায় গত ২৬ বছরেও সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে সফলতা আসে নাই বাংলাদেশে। প্রতিবেশী দেশগুলো সমুদ্র থেকে নিয়মিত প্রাকৃতিক গ্যাস তুললেও এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেকটাই পিছিয়ে। ২৬টি ব্লকের মধ্যে মাত্র ২টি ব্লকে অনুসন্ধান চলছে।
তবে, বাকি ২৪টি ব্লক ইজারা দেয়া এবং সমুদ্রে জরিপের কাজ চলছে বলে জানিয়েছে পেট্টোবাংলা।
দেশের সমুদ্র সম্পদকে কাজে লাগাতে ১৯৯৬ সালে বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান শুরু করে সরকার। এরপর ২০১২ এবং ২০১৪ সালে সমুদ্র সীমার আয়তন আরও বেড়েছে। কিন্তু অনুসন্ধান শুরুর প্রায় ২৬ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও কাঙ্খিত সাফল্য মিলেনি।
সমুদ্রে একমাত্র উৎপাদনশীল গ্যাস ক্ষেত্র ‘সাঙ্গু’ ২০১৩ সালে বন্ধ হয়ে গেছে। এরপর নতুন কোনো গ্যাস ক্ষেত্র এখনও পাওয়া যায়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের সমুদ্র অঞ্চলে গ্যাসসহ প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ মজুদ রয়েছে। দুই পাশ থেকে নিয়মিত গ্যাস তুলছে ভারত এবং মিয়ানমার। তথ্য না থাকায়, প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের সমুদ্র সীমা থেকে গ্যাস তুলছে কিনা তাও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বদরূল ইমাম মতে, মিয়ানমারের দিকে সমুদ্রের মধ্যে প্রচুর গ্যাস ক্ষেত্র পাওয়া যাচ্ছে এবং তারা এখনও এর আবিষ্কার করছে। আবার ভারতের দিকেও একই অবস্থা। আর মাঝখানে রয়েছে বাংলাদেশ। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এখনও বাংলাদেশ সেরকম ভাবে গ্যাস ক্ষেত্র অনুসন্ধানের কাজ শুরু করতে পারে নাই। তাই, দ্রুত অনুসন্ধান কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন তারা।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, ‘কোনো অগ্রগতি নেই। এখন যতক্ষণ পর্যন্ত গ্যাস আছে, তোলা হচ্ছে, এটা না দেখা পর্যন্ত আমরা কিছুই বলতে পারব না। যেমন এখন ভারত থেকে বিদ্যুৎ আনা আমাদের জন্য লাভজনক, ঠিক তেমনিভাবে নিজে গ্যাস উৎপাদন না করে যদি এলাইন দিয়ে নিয়ে আনি, তাহলে সেটা আমাদের জন্য লাভজনক হবে। এ অবস্থাটা আমরা তৈরি করে ফেলেছি।’
তবে, সমুদ্রে জরিপ চালানোসহ বেশ কিছু কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন পেট্টোবাংলার চেয়রাম্যান।
পেট্টোবাংলা চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান বলেন, ‘বাকি যে ২৪টি ব্লক আমাদের হাতে আছে এখন, এটা কিন্তু আমরা এবছরের মধ্যেই ইজারা দিব। আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি এখন। আমাদের যে প্রডাক্শন সাড়ির কন্ট্রাক্ট, সেটি আমরা আপডেট করছি। পাশাপাশি আমরা মাল্টি ক্লেন্ট সার্ভে করার জন্য একটি ফার্মকে নিয়োগ দিয়েছি।’