মানুষের জীবন আজ ওষ্ঠাগত এমন মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে নিরব দুর্ভিক্ষের সূচনা হয়েছে।
নিত্যপণ্যের দাম উর্ধ্বমূখীর প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে এসব মন্তব্য করেন তিনি। বিএনপি সব জায়গায় মাতব্বরি করে, আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন বক্তব্যকে অশালীন বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। আওয়ামীলীগ নেতারা মাসিক হাজার কোটি টাকা আয় করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, আয় নিয়ে মিথ্যাচার না করে মানুষের কষ্ট ও দুর্দশা জানতে ক্ষমতাসীনদের প্রতি আহবান জানান মির্জা ফখরুল।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে দেশজুড়ে ১১ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। সেই ধারাবাহিকতায় আজ ছিল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে যুবদলের বিক্ষোভ সমাবেশ। এ সমাবেশে ঢাকার আশপাশের জেলার নেতা-কর্মীরাও যোগ দেন। এ সমাবেশে বিএনপি নেতারা দাবি করেন- দেশে গণতন্ত্র না থাকায় লাগামহীন দ্রব্যমূল্য। জনগণের প্রতি সরকারের কোনো সহমর্মিতা নেই বলেও অভিযোগ নেতাদের।
ওই সমাবেশে দলের মহাসচিব বলেন, ‘বাজারব্যবস্থার ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। এ জন্য দায়ী আওয়ামী লীগ নেতাদের সিন্ডিকেট। বাংলাদেশে যত চাঁদাবাজি, ঘুষ- সব কিছুর মূলে এই আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, তখনই তারা জনগণের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাওয়ার চেষ্টা করেছে।’
সরকারের বিরুদ্ধে দেশের সব রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে, এই সরকার যদি আরও কিছু দিন ক্ষমতায় থাকে তাহলে এই দেশের অস্তিত্ব থাকবে না। এরা নির্বাচনীব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে, বিচারব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। প্রশাসন যন্ত্র, আমলাতন্ত্রকে সম্পূর্ণভাবে দলীয়করণ করেছে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করেছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তাদের দলীয় লোকের নিয়োগ দিয়ে দুর্নীতির আখড়া তৈরি করেছে।’
তিনি আরও বলেন, আজ দুর্নীতি এমন পর্যায়ে চলে গেছে, কোনো কিছুই দুর্নীতি থেকে বাকি নেই। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে তার অন্যতম কারণ জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো। আরেকটি কারণ হলো, গ্যাসের দাম বাড়ানো। তারা যে এ দেশকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছে তার জবাব তারা দিতে পারবে না। এভাবে সিন্ডিকেট করে এ দেশ থেকে লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। সম্পদ লুট করে বিদেশে বাড়িঘর তৈরি করছে।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের দিন শেষ হয়ে এসেছে। সুতরাং ভালোয় ভালোয় পদত্যাগ করুন। পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করুন।’
খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি এবং সরকারের পতনের এক দফার আন্দোলনের জন্য নেতা-কর্মীদের প্রস্তুত থাকার কথা জানান বিএনপি নেতারা।