ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নাপা সিরাপ খেয়ে দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় সারা দেশের পাইকারি ও খুচরা ফার্মেসি পরিদর্শন করে ওই ওষুধ পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর। সেই সঙ্গে পরীক্ষার প্রতিবেদন ন্যাশনাল কন্ট্রোল ল্যাবরেটরিতে পাঠানোর জন্যও বলা হয়েছে।
শনিবার (১২ মার্চ) ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ স্বাক্ষরিত এক জরুরি অফিস আদেশে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এর আগে শুক্রবার (১১ মার্চ) রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে নাপা সিরাপ খেয়ে একই পরিবারের দুই শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় জেলা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির পক্ষ থেকে নাপা সিরাপ বিক্রি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। এ বিষয়ে জেলার সব ওষুধ ব্যবসায়ীকে অনুরোধ করা হয় সমিতির পক্ষ থেকে।
এ অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে সারা দেশ থেকে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের (প্যারাসিটামল ১২০ মি. গ্রাম/৫ মি. গ্রাম, ব্যাচ নম্বর ৩২১১৩১২১, উৎপাদন তারিখ ১২/২০২১, মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ ১১/২০২৩) উৎপাদিত নাপা সিরাপের নমুনা পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর।
ঔষুধ প্রশাসন অধিদফতরের পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আইয়ুব হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, নাপা সিরাপ খেয়ে দুই শিশুর মৃত্যুর অভিযোগটি খতিয়ে দেখতে এরই মধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে অধিদফতর। সারা দেশ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে আনার পাশাপাশি দুজন পরিচালকের নেতৃত্বে দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মারা যাওয়া শিশুদের পরিবার জানায়, বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) বিকেলে আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুরে ইটভাটা শ্রমিক সুজন খানের দুই সন্তান ইয়াসিন খান (৭) ও মোরসালিন খান (৫) জ্বরে আক্রান্ত হয়। পরে সুজনের স্ত্রী লিমা বেগম বাড়ির পাশের বাজারের মাঈন উদ্দিনের ওষুধের দোকান থেকে নাপা সিরাপ এনে খাওয়ান। ওই সিপার খাওয়ানো কিছুক্ষণ পর থেকেই দুই শিশুই বমি করতে থাকে। একপর্যায়ে তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে তাদের দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে উন্নত চিকিৎসা জন্য জেলা সদর হাসাপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাতেই তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেন চিকিৎসক। বাড়িতে নিয়ে আসার পথে প্রথমে বড় ভাই ইয়াসিন খানের মৃত্যু হয় এবং পরে বাড়িতে ফেরার পর ছোট ভাই মোরসালিন খানের মৃত্যু হয়।