ইউক্রেনে সামরিক অভিযান আরও জোরদার করেছে রাশিয়া। গুরুত্বপূর্ণ খারসন শহর দখলে নেওয়ার দাবি মস্কোর, তবে তা অস্বীকার করেছে কিয়েভ। সীমান্তবর্তী মারিওপোলে অব্যাহত গোলা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কয়েক হাজার মানুষ হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (০৩ মার্চ) খারসনসহ খারকিভ ও গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে রুশ ও ইউক্রেনীয় সেনাদের তুমুল সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি, রয়টার্সসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আরও জোরালো হচ্ছে ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান। রাজধানী কিয়েভের পাশাপাশি উত্তর-পূর্বাঞ্চলে খারকিভ, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে মারিওপোল এবং উত্তরাঞ্চলের চেরনিহিভ শহরে ব্যাপক সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে খেরসনের রুশ সেনাদের সঙ্গে ইউক্রেনের সেনাদের তুমুল লড়াই হয়েছে। এরই মধ্যে অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করেছে মস্কো। তবে স্থানীয়দের দাবি রুশ সেনারা পুরো শহর ঘিরে রাখলেও এখনো তা তাদের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। মুহুর্মুহু রকেট ও গোলা হামলায় কেঁপে উঠছে আরেক গুরুত্বপূর্ণ শহর খারকিভ।
দক্ষিণ-পূর্বের মারিওপোলে ব্যাপক গোলা হামলার জেরে কয়েক হাজার মানুষ হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। আজভ সাগর তীরবর্তী শহরের সমুদ্র এলাকার বেশির ভাগই এখন রুশ সেনাদের দখলে। বিভিন্ন সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি রুশ সেনারা হাসপাতালেও বোমা হামলা চালিয়েছে বলে দাবি ইউক্রেনের।
এদিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে চলছে রাশিয়ার কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ সামরিক বহর। যদিও মার্কিন গোয়েন্দাদের দাবি, গত দুই দিনে খুব বেশি অগ্রসর হতে পারেনি সামরিক বহরটি। পেন্টাগনের দাবি, ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের কঠোর প্রতিরোধের জেরে অনেকটা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে রুশ সেনারা। এ অবস্থায় রুশ সেনারা দল অদল বদল করে পুনরায় একত্রিত হয়ে নতুন কৌশল গ্রহণ করছে বলেও দাবি পেন্টাগনের।
এ ছাড়া জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার প্রধানের মতে, রাশিয়া দেশটিতে আক্রমণ করার পর থেকে এখন ১০ লাখের বেশি শরণার্থী ইউক্রেন থেকে পালিয়ে গেছে।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি একটি টুইটার পোস্টে বলেছেন, মাত্র সাত দিনে আমরা ইউক্রেন থেকে প্রতিবেশী দেশগুলোতে ১০ লাখ শরণার্থীর প্রস্থান দেখেছি।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রথম পাঁচ দিনে ২২৭ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। কর্মকর্তারা বলছেন, সংঘর্ষের সময় ইউক্রেনে আরও ৫২৫ বেসামরিক লোক আহত হয়েছেন।
এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ হতাহতের বেশির ভাগই ভারী কামান ও মাল্টি-লঞ্চ রকেট সিস্টেম থেকে গোলাবর্ষণ এবং বিমান হামলাসহ বিস্ফোরক অস্ত্র ব্যবহারের কারণে ঘটেছে।