ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চল তথা তথা ডোনেটস্ক ও লুহানস্কে ‘সামরিক অভিযানের’ ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ভোরে এক টেলিভিশন বার্তায় এই ঘোষণা দেন বলে এক জানিয়েছে বিবিসি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, যে সময় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ তাকে থামার জন্য অনুরোধ করছে সেই সময়ই টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পুতিন অভিযানের ঘোষণা দেন।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকালে দেয়া ওই ভাষণে পুতিন পূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধাঞ্চলে অবস্থানরত ইউক্রেনীয় সেনাদের তাদের অস্ত্র নামিয়ে বাড়িতে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। যে কোনো রক্তপাতের জন্য কিয়েভকে দায়ী করা হবে বলে ইউক্রেনকে সতর্ক করেছেন তিনি।
বুধবার পূর্ব ইউক্রেইনের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ‘আগ্রাসন’ প্রতিরোধে মস্কোকে সাহায্যের অনুরোধ জানানোর পর পুতিন এ ঘোষণা দিলেন। পুতিন আরও বলেন, ‘ন্যায় ও সত্য’ রাশিয়ার পক্ষে। রাশিয়ার সঙ্গে কেউ লড়াই করতে আসলে মস্কো ‘তাৎক্ষণিক’ প্রতিক্রিয়া দেখাবে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।
রাশিয়ার পদক্ষেপগুলো আত্মরক্ষামূলক বলে দাবি করেছেন। ইউক্রেইন ও রাশিয়ার বাহিনীর মধ্যে লড়াই ‘অনিবার্য’ এবং ‘শুধু সময়ের অপেক্ষা’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে, এরই মধ্যে ইউক্রেনের সীমান্তে রাশিয়া প্রায় দুই লাখ সেনা এবং হাজার হাজার যুদ্ধযান মোতায়েন করেছে বলে দাবি করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
স্থানীয় সময় বুধবার গভীর রাতে এক ভাষণে জেলেনস্কি সতর্ক করে বলেছেন—রাশিয়া যেকোনও দিন ‘ইউরোপে বড় ধরনের যুদ্ধ’ শুরু করতে পারে। তিনি রাশিয়ার নাগরিকদের যুদ্ধের বিরোধিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভাষণে বলেন, তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন। জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কোনও সাড়া নেই।’
ভাষণে জেলেনস্কি দাবি করেন— ইউক্রেনের সীমান্তে রাশিয়ার প্রায় দুই লাখ সেনা এবং হাজার হাজার যুদ্ধযান মোতায়েন রয়েছে। ভাষণের একপর্যায়ে ইউক্রেনীয় থেকে রুশ ভাষায় কথা বলা শুরু করেন জেলেনস্কি। এ সময় তিনি যুদ্ধ প্রত্যাখ্যান করতে রুশদের প্রতি আবেগপূর্ণ স্বরে আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনাদের কাছে ইউক্রেন সম্পর্কে মিথ্যা বলা হচ্ছে।’
এ ছাড়া পুতিনকে ইঙ্গিত করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আপনি আক্রমণ করলে আমাদের মুখ দেখতে পাবেন, পিঠ নয়।’
ইউক্রেন এরই মধ্যে আজ থেকে ৩০ দিনের জন্য দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছে। এবং রাশিয়ায় বসবাসরত লাখ লাখ ইউক্রেনীয় নাগরিককে দেশে ফিরে আসার নির্দেশ দিয়েছে।