আগামীকাল ২১ ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবস। দিনটি যথাযথ ও সুশৃঙ্খলভাবে উদযাপনে আজ রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামীকাল মঙ্গলবার দুপুর ২টা পর্যন্ত জনসাধারণের চলাচল ও সব ধরনের যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
এবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় ছয় স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। বন্ধ থাকবে রাজধানীর কিছু সড়ক। ডিএমপির নির্দেশনা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
নির্দেশনায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রবেশের ক্ষেত্রে সবাইকে পলাশি ক্রসিং ও জগন্নাথ হলের সামনের রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করতে বলা হয়েছে। কোনোক্রমেই অন্য কোনো রাস্তা ব্যবহার করে শহীদ মিনারে প্রবেশ করা যাবে না। শহীদ মিনার থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে দোয়েল চত্বরের দিকের রাস্তা অথবা রোমানা চত্বরের রাস্তা দিয়ে বের হওয়া যাবে। কোনোক্রমেই প্রবেশের রাস্তা দিয়ে বের হওয়া যাবে না।
বন্ধ থাকবে যেসব রাস্তা
বকশিবাজার-জগন্নাথ হল ক্রসিং সড়ক; চাঁনখারপুল-রোমানা চত্বর ক্রসিং সড়ক; টিএসসি-শিববাড়ী মোড় ক্রসিং; উপাচার্য ভবন-ভাস্কর্য ক্রসিং।
গতকাল শনিবার থেকে আজ রোববার সকাল ১০টা পর্যন্ত রাস্তায় আলপনা আঁকার জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আশপাশের রাস্তা বন্ধ থাকবে। তাই গাড়ি ডাইভারশন দেয়া হবে শিববাড়ী, জগন্নাথ হল ও রোমানা চত্বর ক্রসিংগুলোয়।
আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে সোমবার দুপুর ২টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যত্রতত্র অনুপ্রবেশ বন্ধ থাকবে। এক্ষেত্রে নীলক্ষেত, পলাশী মোড়, ফুলার রোড, বকশীবাজার, চাঁনখারপুর, শহীদুল্লাহ হল, দোয়েল চত্বর, জিমনেশিয়াম, রোমানা চত্বর, হাইকোর্ট, টিএসসি, শাহবাগ ইন্টারসেকশন রোড ব্লক দিয়ে গাড়ি ডাইভারশন দেওয়া হবে।
২১ ফেব্রুয়ারি ভোর ৫টায় সাইন্সল্যাব থেকে নিউমার্কেট ক্রসিং, কাঁটাবন ক্রসিং থেকে নীলক্ষেত ক্রসিং এবং ফুলবাড়িয়া ক্রসিং থেকে চাঁনখারপুল ক্রসিং পর্যন্ত প্রভাতফেরি উপলক্ষে সব ধরনের যাত্রীবাহী গাড়ি প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।
একুশের প্রথম প্রহরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জিমনেশিয়াম মাঠে ভিআইপি গাড়িগুলো পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। অন্যরা নীলক্ষেত-পলাশী, পলাশী-ঢাকেশ্বরী সড়কে তাদের গাড়ি পার্কিং করতে পারবেন।
করোনা পরিস্থিতিতে সাধারণ নির্দেশনাবলি
কবরস্থান ও শহীদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ ও পুষ্পস্তবক অর্পণ যারা করবেন, তাদের মাস্ক পরিধানের অনুরোধ করা হয়েছে ডিএমপির নির্দেশনায়। অন্যদের অসুবিধার কথা ভেবে রাস্তায় বসা বা দাঁড়ানো থেকে বিরত থাকা, সর্বসাধারণের চলাচলের সুবিধার জন্য ওপরে বর্ণিত রাস্তায় কোনো প্রকার প্যান্ডেল তৈরি না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
শহীদ মিনারে প্রবেশের ক্ষেত্রে আর্চওয়ের মাধ্যমে তল্লাশি করে সবাইকে প্রবেশ করতে হবে। এক্ষেত্রে সারিবদ্ধভাবে প্রবেশ করতে হবে। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে প্রচার করা নির্দেশনা নাগরিকদের মেনে চলা ও কোনো ধরনের ব্যাগ সঙ্গে বহন না করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
যে কোনো পুলিশি প্রয়োজনে শহীদ মিনার এলাকায় স্থাপিত অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করতেও অনুরোধ করেছে ডিএমপি।
শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পরিদর্শন করেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করেন তিনি।
তিনি জানান, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় তিন শিফটে ছয় স্তরের সার্বিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে পুলিশ। প্রতিটি প্রবেশ পথে চেকপোস্ট ও ভেতরের এলাকায় ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো থাকবে। ইউনিফর্মধারী সদস্যের পাশাপাশি সাদা পোশাকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ এদিন মোতায়েন থাকবে। এছাড়া, বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট, ডিবি, র্যা ব ও সোয়াট টিম দায়িত্ব পালন করবে। সবার সমন্বয়ে ছয় স্তরের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
প্রতিবছর শহীদ মিনারে ২১ ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ বছর করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে তারা সশরীরে উপস্থিত থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন কিনা, এ বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।