দ্বিধায় সার্চ কমিটি

1347
EC Commitee
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

বিদায়ী নির্বাচন কমিশন নিয়ে গত ৫ বছর ধরে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার কমতি ছিলো না। বিশেষ করে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ‘ভোট গ্রহণ’ নিয়ে বেশি বিতর্ক হয়েছে। সর্বশেষ ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা নিয়েও বেশ সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। এ ছাড়াও নিজেদের মধ্যে মতভেদ শেষ বেলায় ব্যক্তিগত আক্রমণে রূপ নেয়। শেষ পর্যন্ত বিতর্কের বোঝা মাথায় নিয়ে বিদায় নেয় কেএম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়োগ নিয়ে দেশের মানুষ তাকিয়ে আছে সার্চ কমিটির দিকে। সার্চ কমিটির কাছে ৩২২ জনের নাম এসেছে। এখান থেকে কাটছাঁট করে রাষ্ট্রপতির কাছে ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবে সার্চ কমিটি। তা থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও চার নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে এখন পর্যন্ত এই নাম চূড়ান্ত করতে পারেনি সার্চ কমিটি।

এদিকে রাষ্ট্রপতির সংলাপ ও সার্চ কিমিটির বৈঠকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো নিরপেক্ষ ও রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত নয় এমন ব্যক্তিদের ইসি নিয়োগের জন্য আহ্বান করেছেন। সেই আলোকেই বাছাইকৃত ব্যক্তিদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকবার বৈঠকও করেছে সার্চ কমেটি। কিন্তু রাষ্ট্রপতির কাছে যে নাম পাঠানো হবে ও তা প্রকাশ নিয়ে এখনও সিদ্ধান্তহীনতায় সার্চ কমিটি। কমিটির কেউ বলছেন, রাষ্ট্রপতির কাছে দেয়ার আগে ওই ১০ জনের নাম প্রকাশ করা উচিত হবে না। কারও মতে, সংশ্লিষ্টদের মত নিয়ে প্রকাশ করার বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। এসব বিষয়ে আলোচনা করতে আগামীকাল শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় সপ্তম বৈঠকে বসতে যাচ্ছে সার্চ কমিটি।

এ প্রসঙ্গে সার্চ কমিটির সদস্য ও সিএজি মুসলিম চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, নাম প্রকাশের বিষয়টি কমিটির সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। সিদ্ধান্ত জানানো আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সার্চ কমিটির এক সদস্য বলেন, যারা নাম প্রকাশের পক্ষে তারা যেন ইসি গঠনে আইনটি ভালোভাবে পড়ে দেখেন। সার্চ কমিটি সেই আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা বজায় রেখে কাজ করছে। অহেতুক সমালোচনা করলে হবে না।

সার্চ কমিটির সাচিবিক দায়িত্বে থাকা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, ইসি নিয়োগে যাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার যোগ্যতার পাশাপাশি শারীরিকভাবে সক্ষমতা রয়েছে তাদের নাম সুপারিশ করা হবে। এ ছাড়া সিইসি হিসেবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও পরিচিত ব্যক্তির কথা ভাবা হচ্ছে। কারণ, বিদায়ী কমিশনের অনেকেই তেমন একটা পরিচিত না থাকায় এ নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। এ কারণে নতুন সিইসি পদে সর্বজনশ্রদ্ধেয় ও পরিচিত ব্যক্তি খোঁজা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংক্ষিপ্ত তালিকায় যাদের নাম আসবে তাদের সবাইকে যদি কমিশনে নিয়োগ দেওয়া হতো তাহলে নাম প্রকাশ করতে সমস্যা ছিল না। যেহেতু অন্তত অর্ধেক নাম বাদ পড়ে যাবে সেক্ষেত্রে তারা নিজেদের সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন মনে করেন কিনা সেই বিষয়টিও বিবেচনায় নিতে হবে।

নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রণীত নতুন আইন অনুযায়ী, সার্চ কমিটি প্রত্যেকটি শূন্যপদের বিপরীতে ২টি করে নাম প্রস্তাব করতে পারবে। সে অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১০টি নাম প্রস্তাবের সুযোগ আছে সার্চ কমিটির।

এদিকে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাবিত নাম প্রকাশের জন্য ফের দাবি জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। সংগঠনটির সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার জানান, আইনে সার্চ কমিটিকে স্বচ্ছতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে বলেছে। কমিটি প্রথম তালিকা প্রকাশ করে কিছুটা স্বচ্ছতা দেখিয়েছে। কিন্তু পরবর্তী পদক্ষেপগুলোতে সেটা না থাকলে পুরোপুরি স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে না।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন