জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের আপিল বোর্ডের দেওয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে এক সপ্তাহের রুল জারি করেছেন আদালত।
এর আগে সকালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থিতা বাতিল সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদন করেন জায়েদ খান। তার আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথি বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলে সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী হওয়া জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে তিনি হারিয়েছেন পদ।
শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় নির্বাচনের আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান এক সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে নায়িকা নিপুণকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ঘোষণা করেন।
গত ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়েছিল চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। এর প্রাথমিক ফলাফলে জয়ী হন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। পরে (শনিবার) আরেক প্রার্থী নিপুণ নির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে আবেদন করলে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে আপিল বোর্ড।
এরআগে, শিল্পী সমিতির নির্বাচনে আপিল বোর্ডের প্রার্থিতা বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) তার আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথির মাধ্যেমে আবেদনটি করা হয়।
বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি শেষে এই আদেশ জারি করেন।
জায়েদ খান জানিয়েছেন, আমি এখনও ভোটে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। এফডিসিতে নিপুণ বহিরাগত ছেলেদের নিয়ে এসে গায়ের জোরে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসেছেন, এ কারণে আমি আইনি প্রক্রিয়ায় এগোচ্ছি। ১৭৬ জন ভোটার আমাকে তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। এর সম্মান আমাকে রাখতেই হবে।
জায়েদ খান আরও বলেন, গত দুইদিন এফডিসিতে শত শত বাইরের মানুষ আনা হয়েছে। পেশিশক্তি দেখিয়ে নিজেকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করলেই কি সেটা কার্যকর হয়ে যাবে? এফডিসিতে সৃজনশীল কাজ হয়। সিনেমা, শিল্পের কাজ হয়। এখানে এত বহিরাগত ছেলে, ওরা কারা?
‘অন্তর জ্বালা’খ্যাত এই নায়কের অভিযোগ, সোহানুর রহমান সোহান, মোহাম্মদ হোসেনকে নিয়ে নিপুণ শুক্রবার রাতে বনানীর একটি রেস্তোরাঁয় বসে এই নীল নকশা তৈরি করে। ওদের গোপন এই তথ্য আমার কাছে আছে। আইনের কাছে এই নীল নকশা হেরে যাবে। অবৈধভাবে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদককে যেন শপথ না করানো হয় এ জন্য আমি সোহানুর রহমান সোহান ও মোহাম্মদ হোসেনকে আজকেও আইনি নোটিশ পাঠিয়েছি। তারা কেউ আইন মানছেনই না। এখন আমার একটাই পথ আইনি প্রক্রিয়ায় লড়াই চালিয়ে যাওয়া।
গত ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়েছিল চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। সেখানে সাধারণ সম্পাদক পদে জয়লাভ করেন জায়েদ খান। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নায়িকা নিপুণ অভিযোগ তোলেন, নির্বাচনে দুর্নীতি করেছেন জায়েদ। টাকা দিয়ে ভোট কিনেছেন তিনি। এসব অভিযোগ নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনও করেছিলেন নিপুণ। লিখিত অভিযোগ জানান নির্বাচনের আপিল বোর্ডের কাছেও। এরপরই বোর্ডকে বিষয়টির সুরাহা করার দায়িত্ব দেয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। এ জন্য শনিবার বিকেলে বৈঠক ডাকে আপিল বোর্ড। এতে নিপুণ অংশ নিলেও জায়েদ ছিলেন অনুপস্থিত। তার অনুপস্থিতিতেই সোহানুর রহমান সোহান ঘোষণা করেন, শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জায়েদ খান থাকছেন না। নির্বাচনে অনিয়ম করার অভিযোগে তার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। তার পরিবর্তে অপর প্রার্থী নিপুণ বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন।