শিক্ষকতা শেষে অবসরে গেছেন, তারপর থেকে ঢাকায় এসে অবসর বোর্ডে ধর্ণা। কিন্তু বোর্ডের কাছে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় প্রায় ৩২ হাজার শিক্ষক-কর্মচারি চরম ভোগান্তির পাশাপাশি পড়েছেন অনিশ্চয়তায়।
জীবনের শেষ সম্বল পেনশনের টাকা নিয়ে এরকম অনিশ্চিয়তায় থাকা সবাই দেশের বিভিন্ন এমপিওভূক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাবেক শিক্ষক বা কর্মচারি। বোর্ড বলছে, টাকার জন্য শিক্ষামন্ত্রাণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।
দিনভর অপেক্ষা-দৌড়ঝাপ। যাদের সবাই এসেছেন দেশের কোন না কোন প্রত্যন্ত এলাকা থেকে। আশা শিক্ষকতা বা পেশা জীবনের পর অবসর সুবিধার পাওনা টাকা। এক ভুক্তভোগী জানান, দেড় বছরে তার কাজের ১৪ শতাংশ শেষ হয়েছে। তার অভিযোগ, এভাবে চললে মৃত্যুর পরে টাকা দিয়ে তারা করবে কী! মাঝে মাঝেই এসে খোঁজ নেন, কিন্তু টাকা কবে পাওয়া যাবে তার কোন নির্দিষ্ট সময় দেয়া হয়না।
এরকম হতাশা বা ক্ষোভ যারা এখানে আসেন বা আসছেন তাদের সবারই। যারা বয়স্ক বা অসুস্থ্য তাদের হয়ে আসছেন সন্তান বা স্বজনরা। তবে কবে এ অপেক্ষার শেষ হবে তাও জানেননা।
অবসর বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, তাদের আয়ের অর্থ দিয়ে সবার টাকা পরিশোধ করা সম্ভব হয় না। প্রতিবছর প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ঘাটতি হয়। দীর্ঘদিন এই ঘাটতি জমা হয়ে ৩২ হাজার শিক্ষকের আবেদন জমে আছে। টাকা পরিশোধের জন্য এক হাজার কোটি টাকা চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।
বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী বলেন, অন্যান্য উৎস থেকে আমরা শিক্ষকদের অবসর সুবিধা দেয়ার জন্য কিছু টাকা পাব বলে আশা করছি। আমরা আশাবাদি, এই আর্থিক সমস্যার সমাধান খুব দ্রুতই হবে।
তবে ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে দালাল চক্রের দৌরাত্ব এবং ভোগান্তি কিছুটা কমেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, আগে এখানে আসলে ফাইল জমতেই থাকত। এখন সেই সমস্যাটা নেই। কয়েকদিন পরেই একটি অ্যাপ চালু হবে, সেটি চালু হলে শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের আবেদনের আপডেট জানতে পারবেন। তখন আর ঢাকায় আসার প্রয়োজন হবেনা।
২০১৯ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত আবেদনের টাকা আগামি এক থেকে দুই মাসের মধ্যে পরিশোধের করতে পারবেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।