বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আইনমন্ত্রীর বরাত দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আইনে এ ব্যাপারে কোনো সুযোগ নেই, সুতরাং তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার একটি চিঠি দিয়েছেন আমরা দেখেছি এবং আইনমন্ত্রী একটি মতামত দিয়েছেন সেটা আমরা পর্যালোচনা করছি। সেই সঙ্গে আরও অধিকতর জায়গায় যদি নিতে হয় তাহলে আমরা পরামর্শ নিব। এখন আমাদের পর্যালোচনায় এটা এসেছে যে এটা নিয়ে আরও আমাদের কথা বলতে হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন, আইনতগত কোনো সুযোগ নেই। কাজেই আমাদের অবস্থান আপনারা বুঝছেন। আমরা বসে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।
তিনি আরও বলেন, আপনারা জানেন তিনি একজন দন্ডপ্রাপ্ত আসামি এবং তার দন্ড কার্যকর হচ্ছিল। আমরা তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দিচ্ছিলাম। তারপরও তার ছোট ভাই আবেদন করাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক কারণে তার দন্ডাদশ স্থগিত করে বাসা থেকে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের যেকোনো জায়গা থেকে তিনি চিকিৎসা করাতে পারবেন বলেও প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এখন তার ছোটভাই দেশের বাইরে চিকিৎসার আবেদনে করেছেন এ ব্যাপারে আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন, আইনে এ ব্যাপারে কোনো সুযোগ নেই।
এর আগে সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলে, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার আবেদনের মতামত দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে সেই মতামত জানানো সমীচীন হবে না কারণ সেটা গোপন বিষয়, এটা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পর্যন্ত যাবে তারপর বলা সম্ভব।
গত মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) আনিসুল হক জানান, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া সংক্রান্ত কোনো আইন ও নজির খুঁজে পাওয়া যায়নি। খুব শিগগিরই সিদ্ধান্তটি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।
এর আগে খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে গত সোমবার (২০ ডিসেম্বর) হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ। তিনি বলেন, ‘কারও প্ররোচনায় বা কারও স্বার্থে নয়, নিজের দায়িত্ব থেকে একজন অসুস্থ মানুষের মানবাধিকার রক্ষার জন্য এ রিট দায়ের করেছি।’
তার আগে গত ১২ ডিসেম্বর আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত জানতে ‘অপেক্ষা’ করতে হবে। এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর সংবাদ মাধ্যমকে খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠাতে ‘আইনি উপায়’ খোঁজার কথা বলেছিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ নভেম্বর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খালেদা জিয়াকে। ১৭ নভেম্বর তার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ে। উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য এই তিন দেশের যেকোনো একটিতে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে মেডিকেল বোর্ড