বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন দিতে হলে অবশ্যই এর আগে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে হবে।
আজ শনিবার বিকেলে সিলেটের রেজিস্ট্রি মাঠে সিলেট মুক্ত দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব এসব কথা বলেন। জাতীয়, দলীয়, দেশাত্মবোধক ও গণসংগীত পরিবেশনের পর অতিথিদের আলোচনা শুরু হয়।
এ সময় মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘সরকার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম উচ্চারণ করা হয়নি, তাজউদ্দিন আহমদের কথা উচ্চারণ করা হয়নি। এমনকি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানীকে আড়ালে রাখা হয়েছে।’
স্বাধীনতার যুদ্ধ এদেশের আপামর জনতা করেছে; একজন ব্যক্তি বা একক কোনো দল করেনি বলেও উল্লেখ করেন বিএনপিনেতা।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, সরকার খালেদা জিয়াকে বিদেশ যেতে দিচ্ছে না। উন্নয়ন ও মেগা প্রকল্পের কথা বললেও, দেশে দারিদ্র্য বেড়েছে, অর্থনীতি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
দেশে বিচার ব্যবস্থা ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, করোনায় মারা গেছে বহু লোক, টিকা নিয়েও দুর্নীতি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে মুক্তভাবে নিঃশ্বাস নেওয়ার সুযোগ নেই।
সমাবেশে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস বিকৃত করছে। জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে স্বাধীনতার যুদ্ধের শুরু হয়েছে; এটা সরকার মানতে চায় না। গণতন্ত্র হত্যা, বাকস্বাধীনতা হরণ করছে আওয়ামী লীগ।
মুক্তিযুদ্ধের সময়ে সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন ঘটনার স্মৃতিচারণ করে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা যদি বিদ্রোহ না করতাম, মেজর জিয়া যদি স্বাধীনতার ঘোষণা না করতেন ও অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল নিয়ে বিদ্রোহ না করতেন তাহলে মুক্তিযুদ্ধ হত না। এ দেশও স্বাধীন হত না। আজও পাকিস্তান থাকত। এটি হল প্রকৃত ইতিহাস। সুতরাং সময় এসেছে ইতিহাসকে ঠিক করার। মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্র। গণতন্ত্রকে বিলীন করে দেওয়া হয়েছে।’
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এবং সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম বলেন, ‘এ দেশের মানুষ জানে বলেই আওয়ামী লীগকে কখনও বিশ্বাস করে নাই। এখনও বিশ্বাস করে না বলেই আজকে আওয়ামী লীগ ভোটের রাজনীতি থেকে সরে গেছে।’
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটি, সিলেট বিভাগের আহ্বায়ক আরিফুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।