পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী হিসেবে ৬ ডিসেম্বরকে ‘মৈত্রী দিবস’ হিসেবে উদযাপন করবে ভারত ও বাংলাদেশ।
গতকাল শুক্রবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সরকার ও সাধারণ জনগণের অমূল্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এই দিবসটি পালিত হবে।
এসময় প্রতিমন্ত্রী শ্রদ্ধার সঙ্গে বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গকারী ভারতীয় সেনাদের স্মরণ করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের সঙ্গে ভারতের ১৮ হাজারেরও বেশি শহীদের রক্ত মিশে বাংলাদেশের স্বাধীনতায় অর্জিত হয়েছে। এর মাধ্যমে আমাদের দুই দেশের মধ্যে বিশেষ বন্ধুত্ব সৃষ্টির ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, ঢাকা ও নয়াদিল্লিসহ বিশ্বের আরও ১৮টি দেশে একসঙ্গে মৈত্রী দিবস পালিত হবে। অন্যান্য দেশগুলো হল- বেলজিয়াম, কানাডা, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া, কাতার, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, জাপান, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুইজারল্যান্ড, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
অন্যদিকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর (এমইএ) অফিসিয়াল মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছেন, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স (আইসিডব্লিউএ) নয়াদিল্লিতে ৬ ডিসেম্বর একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।
এ বিষয়ে অরিন্দম বাগচি বলেছেন, ‘আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, মৈত্রী দিবসের আয়োজন ভারতের জনগণ এবং বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে গভীর এবং স্থায়ী বন্ধুত্বের প্রতিফলন, যা রক্ত এবং ত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিতব্য ওই অনুষ্ঠানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি ভিডিও বার্তা পাঠাবেন।
মৈত্রী দিবস উপলক্ষে ঢাকায়ও বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
চলতি বছরের মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় ৬ ডিসেম্বরকে ‘মৈত্রী দিবস’ হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর প্রথম দেশ হিসেবে ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে বিভিন্ন পররাষ্ট্রবিষয়ক বিশ্লেষকদের মতে, অমীমাংসিত তিস্তার পানি বণ্টন ইস্যুসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও, বাংলাদেশ ও ভারত গঙ্গা চুক্তি বাস্তবায়ন, স্থল সীমান্ত চুক্তি এবং আন্তসীমান্ত সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলাসহ বেশ কিছু দুর্দান্ত অর্জন করেছে। এ ছাড়া দুই ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশি দেশের মধ্যে যোগাযোগ ও বাণিজ্যেরও আশানুরূপ বৃদ্ধি হয়েছে।