হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস শনাক্ত হওয়ার যে খবর এসেছে, তা ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এজেডএম জাহিদ হোসেন।
রোববার (২১ নভেম্বর) সকালে সংবাদমাধ্যমে তিনি জানান, খালেদা জিয়ার অবস্থা আগের মতোই আছে। তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। তিনি এখনো ক্রিটিক্যাল অবস্থার মধ্যেই আছেন।
এন্ডোসকপি পরীক্ষায় খালেদা জিয়ার ‘লিভার সিরোসিস ধরা পড়েছে’ বলে শনিবার খবর দেয় কয়েকটি সংবাদমাধ্যম। বিএনপির চেয়ারপারসনের সাবেক প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেলও এক ফেসবুক পোস্টে একই ধরনের কথা বলেন।
সেখানে তিনি লিখেন, ‘তার রোগ ও শারীরিক অবস্থার কথা প্রচার করা না হলেও আমি সাংবাদিকতার কলাকৌশল প্রয়োগে বিভিন্নভাবে খোঁজখবর করে নিশ্চিত হয়েছি যে, তিনি তার পুরনো জটিল রোগগুলো ছাড়াও ডিকমপেন্স্যাটেড লিভার সিরোসিস এ আক্রান্ত হয়েছেন। এটা সম্ভবতঃ NASH (Non alcoholic steato hepatitis) অর্থাৎ ফ্যাটি লিভার থেকে হয়ে থাকতে পারে। এখন এর দুটি মাত্র চিকিৎসা: স্টেম সেল ট্রান্সপ্লান্টেশন থেরাপি এবং তাতেও কাজ না হলে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করা। এর কোনোটিই বাংলাদেশে সম্ভব নয় এবং করার সুযোগ নেই।’
তিনি আরও লিখেন, ‘আমি যতদূর জেনেছি, শরীর থেকে রক্ত যেতে যেতে তার হিমোগ্লোবিন একেবারে কমে গেলে এবং রক্তবমি হতে থাকলে তাকে এবার হাসপাতালে নেওয়া হয়। ডাক্তারেরা এন্ডোস্কপি করে তার লিভার সিরোসিস শনাক্ত করেন। তার দেহে দফায় দফায় রক্ত দেয়া হয় এবং তার বড় হয়ে যাওয়া রক্তনালি এন্ডোস্কপির মাধ্যমে Oesophageal Band ligation করা হয়েছে এবং সিসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এর বেশি কিছু বাংলাদেশের ডাক্তারদের করার নেই বলেই জানানো হয়েছে।’
এভারকেয়ার হাসপাতালে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন খালেদা জিয়া। তার চিকিৎসার জন্য ১০ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড করা হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনকে নরম খাবার দেওয়া হচ্ছে। বিছানাই বেশির ভাগ সময় কাটাতে হচ্ছে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে। প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি তার পাশে থাকছেন।
এর আগে ১৩ নভেম্বর খালেদা জিয়ার নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এর মধ্যে খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নিতে আবেদন করা হলেও কোনো সাড়া মিলছে না। এ অবস্থায় দলের পক্ষ থেকে দলীয় চেয়ারপারসনের বিদেশে নিয়ে সুচিকিৎসার দাবিতে বিএনপির গণ-অনশন করেছে।