‘বিএনপি নিজেরা কোনো আইন-আদালত মানে না, সেই কারণেই তারা লাগামহীন ও দায়িত্বহীন কথা বলতে পারে’ বলেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে শঙ্করমঠ ও মিশনের শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার যুব সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে ‘সরকার চাইলে বিএনপিনেত্রীকে বিদেশে নিতে পারবেন’ বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী একথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কথায় মনে হচ্ছে আইন-আদালত কোনো কিছুরই দরকার নেই, সরকার চাইলেই খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে পারে। তাহলে সরকারকে জজ কোর্ট, হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকাও পালন করতে হবে। আইনমন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন, আইনানুযায়ী খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর কোনো সুযোগ নেই।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একটু অসুখ হলেই বিদেশ কেন নিয়ে যেতে হবে—এমন প্রশ্ন রেখে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, দেশে কোটি কোটি মানুষের চিকিৎসা হয়, দেশে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক ভালো হাসপাতাল আছে, যেখানে অনেক ভালো চিকিৎসা হয় এবং অন্যদেশ থেকেও অনেকে এখানে অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসা নিতে আসে। বেগম খালেদা জিয়ার পেটে-হাঁটুতে বা অন্য কোনো সমস্যা হলেই বিদেশ নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা জিকির তোলেন কেন সেটাই হচ্ছে প্রশ্ন।
এভাবে বিদেশ নিয়ে যাওয়ার ধোঁয়া তোলার মাধ্যমে তারা আমাদের চিকিৎসক এবং হাসপাতালগুলোকে অবজ্ঞা প্রদর্শন করছেন, বলেন চট্টগ্রাম-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আর মির্জা ফখরুলের বক্তব্যে মনে হচ্ছে আইন-আদালত কোনো কিছু দরকার নাই, সরকারকে হাইকোর্ট, জজ কোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট সব কিছুর ভূমিকা পালন করতে হবে। যেটি কখনো সম্ভব নয় এবং সমীচীন নয়।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, দুর্গাপূজার সময় যারা দেশে বিভেদ সৃষ্টি করতে চেয়েছে এরা স্বাধীনতার শত্রু, এদের পূর্ব পুরুষ আমাদের স্বাধীনতা চায়নি, এরা আমাদের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। এরা এখনো পাকিস্তানি ভাবধারা মনে ধারণ করে, এরা দেশের শত্রু, এদের চিহ্নিত করতে হবে। অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
শ্রীমৎ তপনানন্দ গিরি মহারাজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আল মামুন। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন শ্রীমৎ পরমানন্দ মহারাজ। বক্তব্য দেন বিমল কান্তি দাশ, কাউন্সিলর শফিউল আলম মুরাদ, দুলাল দে প্রমুখ।
এর আগে যুব সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থা পাকিস্তান থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম আমরা অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র রচনা করার জন্য। আজকে যারা সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টি করতে চায়, ধর্মীয় বিভাজন করে সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চায়, তারা শুধু সমাজের শত্রু নয়, রাষ্ট্রের শত্রু। কারণ এই রাষ্ট্র রচিত হয়েছে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র রচনা করার জন্য।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ধর্ম যার যার এই রাষ্ট্র সবার, সবাই সবার আনন্দ উৎসবে শামিল হন, এটিই আমাদের সংস্কৃতি। এই চেতনাই আবহমান বাঙালি, বাংলা ও বাংলাদেশ ধারণ করে। তাই ছোটখাট বিচ্ছিন্ন ঘটনা আমাদের এই সম্প্রীতির বন্ধনে কখনো বিভেদ তৈরি করতে পারেনি এবং পারবে না।