জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে তৃতীয় দিনে পণ্য ও গণপরিবহন ধর্মঘট চলছে। পথে ঘাটে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। হেঁটে এবং দফায় দফায় যানবাহন পরিবর্তন করে ছুটতে হচ্ছে গন্তব্যে।
জীবন-জীবিকার প্রযোজনে সবাই ছুটছেন অনিশ্চিত যাত্রায়। বাস ও ট্রাকের পর সারা দেশে বন্ধ রয়েছে লঞ্চও। এখন চলছে শুধু ট্রেন ও সীমিত আকারে বিআরটিসির বাস। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
দফায় দফায় যানবাহন পরিবর্তনই শুধু নয়, হেঁটে রওনা হতে হয়েছে বেশিরভাগ মানুষকে। সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে শিশু ও বয়স্করা। রাজধানীর প্রতিটি বাস স্টপেজে দেখা গেছে গাড়ির জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রীদের ভিড়।
শুক্রবার (৫ নভেম্বর) থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘটের আজ তৃতীয় দিন। রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসের সকালে অফিসের জন্য বের হয়ে কম-বেশি সবাই পড়েছেন বিপাকে। এ সময় অনেকেই হেঁটে হেঁটে গন্তব্যে উদ্দেশে রওনা দেন। এছাড়া সিএনজি অটোরিকশা কিংবা পাঠাও-উবার সার্ভিস চালু থাকলেও ভাড়া চাওয়া হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি। তাও চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় অস্বস্তির সঙ্গে চাকরিজীবী ও শিক্ষার্থীদের পূর্বনির্ধারিত সূচি মানতে গিয়ে ভোগান্তি পৌঁছেছে চরমে।
এদিকে কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলোতে উপচেপড়া যাত্রী উঠতে দেখা যায়।
বাস ভাড়া বাড়ানো নিয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সঙ্গে আজ বৈঠকে বসছেন বাস মালিকরা। জানা গেছে, জ্বালানি তেলের বাড়তি দামসহ ১৯টি খাতের ব্যয় ধরেই ভাড়া নির্ধারণ করার প্রক্রিয়া চলছে। প্রতিটি ধাপেই বাড়তি দর যুক্ত করে নতুন ভাড়া নির্ধারণের দাবি করেছেন মালিকরা।
সড়কের যখন এ অবস্থা তখন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভরসার নৌপথও অনিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে জাহাজ পরিবহন মালিক সমিতি। তাদের দাবি, তেলের দামের সঙ্গে মিলিয়ে ভাড়া বৃদ্ধি করা না হলে, সম্ভব নয় লঞ্চ চলাচল অব্যাহত রাখা।
এদিকে না জেনে যারা এসেছিলেন লঞ্চ টার্মিনালে তারাও পড়েছেন ভোগান্তিতে। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে জনিয়েছে, যাত্রীদের জিম্মি করে ভাড়া বৃদ্ধি অনৈতিক কাজ। মালিক কর্তৃপক্ষের দাবি, ডিজেলের দাম বাড়ানোতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন মালিকরা।
যাত্রীবাহী লঞ্চের ভাড়া ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রতি কিলোমিটারে এক টাকা ৭০ পয়সার পরিবর্তে তিন টাকা ৪০ পয়সা এবং ১০০ কিলোমিটারের পর এক টাকা ৪০ পয়সার বদলে দুই টাকা ৮০ পয়সা করার প্রস্তাব করেছেন লঞ্চ মালিকরা।
এদিকে চট্টগ্রামে পরিবহন মালিকদের একাংশের আজ বাস চালানোর ঘোষণা দিয়েছে। গতকাল নগরের পথে পথে শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও অবস্থানের কারণে দুর্ভোগের শিকার হয়েছে সাধারণ মানুষ। অনেকের ব্যক্তিগত যান চলাচলেও শ্রমিকরা বাধা দেয়। এমন অবস্থা সরকার দল সমর্থিত পরিবহন মালিকদের একটি অংশ আজ রোববার সকাল থেকে নগরে যানবাহন চলাচল করার ঘোষণা দিয়েছে।