৩ নভেম্বরের মধ্যে দিয়ে দেশে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঘটে। সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার অহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীতে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
জেলহত্যায় সাজাপ্রাপ্তদের দণ্ড কার্যকরের পর নেপথ্যের কুশীলবদের ভূমিকা উন্মোচনে তদন্ত কমিশন নিয়ে ভাবা হবে বলেও জানান তিনি।
জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। শ্রদ্ধা জানানোর পর দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের আরও বলেন, জেলহত্যার সাজাপ্রাপ্তদের দণ্ড কার্যকরের পর পেছনের কারিগরদের বিষয়ে তদন্ত কমিশন গঠন করা হবে। সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর মূলোৎপাটনই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
পরে দলের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন কাদের। একে একে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগসহ দলের সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে সকল গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
পরে বনানী কবরস্থানে জাতীয় নেতার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলের নেতাকর্মীরা। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার তিন মাসের মাথায় ৩ নভেম্বর কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর চার সহচর ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী মহান চার নেতাকে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নির্মূল করতেই তাদের হত্যা করে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি।
বুধবার সকালে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রথমে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
কারাগারে নিহত চার নেতা হলেন: ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনকারী সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, অর্থমন্ত্রী এম মনসুর আলী, খাদ্য ও ত্রাণমন্ত্রী এ এইচ এম কামারুজ্জামান। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খুনিচক্র এ চার নেতাকে গ্রেপ্তার এবং কারাবন্দি করা হয়।
জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) আওয়ামী লীগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই জাতীয় চার নেতাকে হত্যার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিজয় ও চেতনা নির্মূল করা। কিন্তু বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষ সুদীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম আর আত্মত্যাগের বিনিময়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর খুনিচক্র এবং তাদের হত্যার রাজনীতিকে পরাজিত করেছে।
বুধবার (৩ নভেম্বর) সূর্যোদয়ের ক্ষণে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবন এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও সারা দেশের শাখা কার্যালয়গুলোতে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল সাড়ে ৮টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। সকাল ৯টায় বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে সব শহীদ ও জাতীয় তিন নেতার সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। একই সময়ে রাজশাহীতে সমাহিত এ এইচ এম কামারুজ্জামানের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও মোনাজাত করা হবে। বেলা ১১টায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে।