টিকায় আগ্রহ কম, ১৭ শতাংশই দ্বিতীয় ডোজ নেননি

1856
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

বাংলাদেশে করোনার টিকা কার্যক্রম শুরুর কিছুদিন পর থেকেই মোবাইল ফোনে খুদেবার্তা পাচ্ছিলেন না অনেক মানুষ। টিকার কাগজে একটি নির্দিষ্ট তারিখে লিখে দেওয়া হলেও খুদেবার্তা না আসায় টিকা নিতে পারছিলেন না। কেউ কেউ আবার হাসপাতালে গিয়েও ফিরে এসেছেন। এসব ভোগান্তি কমাতে এবং দেশের অধিকাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনতে সরকার শুরু করে গণটিকার কার্যক্রম।

কয়েক ধাপে চলা এই কার্যক্রমের সর্বশেষ ছিল গত ২৮ সেপ্টেম্বর। প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে করা এই ক্যাম্পেইনে স্বাস্থ্য বিভাগ ৮০ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। ২৮ ও ২৯ সেপ্টেম্বর মোট ৭৮ লাখ ১১ হাজার ২১৬ জনকে তারা সিনোফার্মের প্রথম ডোজ টিকা দিয়েছিল। এর মধ্যে ২৮ সেপ্টেম্বর দিয়েছিল ৬৬ লাখ ২৫ হাজার ১২৩ জনকে।

তাদের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার তারিখ ছিল বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর)। কিন্তু ওই দিন দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন মাত্র ৫৪ লাখ ৪৪ হাজার মানুষ। অর্থাৎ সাড়ে ২৩ লাখ বা ১৭ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয় ডোজ নিতে যাননি।

সিনোফার্মের টিকার কার্যকারিতা রক্ষার জন্য প্রথম ডোজ নেওয়ার চার সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে। সেই হিসেবে ২৮ অক্টোবর দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার দিন নির্ধারিত ছিল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছিল, ২৮ ও ২৯ সেপ্টেম্বর প্রথম ডোজ নেওয়া সবাই ২৮ অক্টোবর দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারবেন। কিন্তু সবাই টিকা নিতে আসেননি।

এ জন্য সরকারের প্রচারের ঘাটতির কথা বলেছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, মাঠপর্যায়ে করোনা টিকার ব্যাপারে সঠিক তথ্যও মানুষ পাচ্ছে না। তারা জানেই না কখন টিকা নিতে হবে। আবার করোনার প্রকোপ কমে আসায় মানুষের মধ্যে টিকা নেওয়ার আগ্রহও কমে গেছে বলে মনে করছেন কেউ কেউ।

তবে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনার টিকা ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যসচিব শামসুল হক অবশ্য সংবাদমাধ্যমের কাছে আশা প্রকাশ করে বলেছেন, শনিবার সবাই দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে আসবেন।

অপরদিকে প্রথম ডোজ টিকা নিয়ে দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় আছেন ১ কোটি ৪৭ লাখ ৪০ হাজার ১৭ জন মানুষ। অন্যদিকে নিবন্ধন করে টিকার অপেক্ষায় আছে ১ কোটি ৬৩ লাখ ৭৬ হাজার ৭১৫ জন।

এদিকে ১ নভেম্বর থেকে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী স্কুলশিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। প্রাথমিকভাবে ঢাকার ১২টি কেন্দ্রে এই স্কুলের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং শিগগিরই এই কার্যক্রম প্রতিটি জেলায় শুরু করা হবে বলে তিনি জানান। সেই সঙ্গে দৈনিক টিকা কার্যক্রমও চলমান থাকবে।

বুধবার রাতে বাংলাদেশে নতুন করে আরও ৫৫ লাখ ডোজ চীনের সিনোফার্মের টিকা এসে পৌঁছেছে। এ নিয়ে প্রায় দুই কোটি ডোজ টিকা মজুত আছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। সামনের দুই তিন দিনের মধ্যে ৮০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়ার কথা রয়েছে।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন