কোহলিদের ১০ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাসে বাবরের পাকিস্তান

1983
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

বিশ্বকাপ—সেটা ৫০ ওভার কিংবা ২০ ওভারের সংস্করণে, ভারতকে কখনো হারাতে পারেনি পাকিস্তান। এর আগে ১২বারের মুখোমুখিতে প্রতিবারই ফিরতে হয়েছে হার নিয়ে। আজ সে ইতিহাস পাল্টাতে পারল পাকিস্তান।

দলটির কিংবদন্তি সব অধিনায়কেরা এর আগে বিশ্বকাপে বরাবরই ভারতের কাছে হারের গ্লানি নিয়ে ফিরেছেন। কিন্তু বাবর আজমের পাকিস্তানে বদলে গেল ইতিহাসের সে ধারা। দুবাইয়ে আজ ভারতকে ১০ উইকেটে হারিয়ে এবার টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শুভসূচনা করল পাকিস্তান। ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিলিয়ে ভারতের বিপক্ষে এটাই প্রথম জয় পাকিস্তানের।

আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১৫১ রান তুলেছিল ভারত। বিরাট কোহলিদের বোলিং–শক্তি বিচারে লক্ষ্যটা তাড়া করা পাকিস্তানের জন্য মোটেও সহজ ছিল না। কিন্তু দুই ওপেনার বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের মসৃণ ব্যাটিংয়ে পাকিস্তান যেন কোনোকিছু টের পাওয়ার আগেই জয় তুলে নিল!

ক্যারিয়ারের প্রথম টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে নেমে প্রথম ম্যাচেই ভারতকে হারিয়ে বাবর বুঝিয়ে দিলেন এই বিশ্বকাপে পাকিস্তানও ফেবারিট। অন্যদিকে যশপ্রীত বুমরা, ভুবনেশ্বর কুমার, মোহাম্মদ শামিদের মতো ভুবন কাঁপানো বোলারদের নিয়ে পাকিস্তানের কোনো উইকেট ফেলতে পারেনি ভারত। বিরাট কোহলির আজ রাতে ঘুম হবে তো!

শাহিন আফ্রিদির কিন্তু দারুণ ঘুম হবে। ভারতের গভীর ব্যাটিং–অর্ডার বিচারে সংগ্রহটা খুব ভালো বলা যাবে না। তাতে বাঁহাতি এ পেসারের অবদান স্রেফ দুর্দান্ত। ৩১ রানে ৩ উইকেট নেন তিনি।

ভারতের ইনিংসে প্রথম তিন ওভারের মধ্যে বিপজ্জনক দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুলকে তুলে নেন শাহিন আফ্রিদি। এরপর ফিফটি তুলে নিয়ে শেষ ওভারে যতটা বেশি সম্ভব রান তুলে নেওয়ার অপেক্ষায় থাকা কোহলিকেও তুলে নেন ১৮.৪ ওভারে।

শাহিন আফ্রিদি যদি পাকিস্তানের স্মরণীয় এ জয়ের প্রথম ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন, বাবর ও রিজওয়ান তাহলে বাকি কাজটা সেরেছেন। ৫২ বলে ৬৮ রানে অপরাজিত ছিলেন বাবর। ওদিকে রিজওয়ান ৫৫ বলে ৭৯ রানে অপরাজিত থেকে দারুণ সঙ্গ দেন অধিনায়ককে।

ভারত এ ম্যাচে নিজেদের পাঁচ নিয়মিত বোলারই ব্যবহার করেছে। উইকেট ফেলতে না পারলেও ‘পার্ট টাইম’ বোলার এনে পরীক্ষা–নিরীক্ষার মধ্যে যাননি কোহলি।

তবে নিশ্চিদ্র ব্যাটিং বলতে যা বোঝায় ঠিক সেটাই করেছেন বাবর–রিজওয়ান। পাওয়ার প্লে–র প্রথম ৬ ওভারে ৪৩ রান তুলে তাড়া করার ভিতটা গড়ে ফেলেন দুজন। এরপর লক্ষ্য ছিল এক–দুই রানে স্কোরকার্ড সচল রাখার পাশাপাশি বাজে বল থেকে বাউন্ডারি তুলে নেওয়া।

পাওয়ার প্লে শেষে নবম ওভার থেকে সে কাজটা শুরু করেন দুই ওপেনার। জাদেজাকে মিডউইকেট দিয়ে ছক্কা মারেন বাবর। এরপর থেকে প্রায় প্রতি ওভারেই চার কিংবা ছক্কা আদায় করেন দুজন। বরুন চক্রবর্তীর এক ওভারেই দুই ছক্কা মারেন বাবর–রিজওয়ান।

১৫তম ওভারের পর ম্যাচে জয় মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায় পাকিস্তানের। শেষ ৩০ বলে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৩১ রান। যদিও দলটা পাকিস্তান—অনিশ্চয়তা যাদের গায়ের সঙ্গে লেপ্টে থাকে সব সময়।

কিন্তু বাবর–রিজওয়ানে যেন দেখা গেল নতুন এক পাকিস্তান! সুন্দর–স্বাভাবিক ব্যাট করে ১৩ বল হাতে রেখে দলকে স্মরণীয় এক জয় এনে দেন দুই ওপেনার। ৩ ছক্কা ও ৬ চারে ইনিংসটি সাজান রিজওয়ান। বাবরের ইনিংসে ছিল ২ ছক্কা ও ৬টি চারের মার।

ভারতের হয়ে জাদেজা ৪ ওভারে ২৮ রান দেন। বুমরা ৩ ওভারে দেন ২২ রান। বাকি তিন বোলারের সবাই ওভারপ্রতি গড়ে আটের বেশি রান দিয়েছেন।

শেয়ার করতে ক্লিক করুন