চট্টগ্রামে পূজা মণ্ডপে হামলার ঘটনায় ছাত্র-যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের তিন নেতাসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হামলার ঘটনায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা জড়িত বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন যুব অধিকার পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগরের আহ্বায়ক মো. নাছির, সদস্য সচিব মিজানুর রহমান, বায়েজিদ বোস্তামী থানার আহ্বায়ক মো. রাসেল, নগর ছাত্র অধিকার আন্দোলনের দপ্তর সম্পাদক মো. ইমন, কর্মী ইয়ার মোহাম্মদ, জিয়া উদ্দিন, ইয়াসিন আরাফাত, হাবিবুল্লাহ, ইমরান হোসেন ও মো. মিজান। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে শিবিরের সাবেক নেতাকর্মী হিসেবে অভিযোগ আছে বলে পুলিশ জানায়।
শুক্রবার (২২ অক্টোবর) কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রামের সাতকানিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হকের নেতৃত্বাধীন ছাত্র-যুব অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাদের শনাক্ত করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা স্বীকার করেছেন তারা পূজামণ্ডপে হামলার চেষ্টা ও ব্যানার ভাঙচুর করেন।
কুমিল্লার ঘটনার জেরে গত শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লা জে এম সেন হল পূজামণ্ডপে হামলা, গেটের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা ও মণ্ডপে ঢিল ছোড়া হয়। পরদিন শনিবার পুলিশ বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় ৮৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করে। এছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয় ৫০০ জনকে। নাম উল্লেখ করা আসামিদের বেশির ভাগই নগরের বৃহৎ পাইকারি কাপড়ের বাজার টেরিবাজার ও আন্দরকিল্লা মসজিদ মার্কেটের দোকানের মালিক ও কর্মচারী।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, আন্দরকিল্লা এলাকার বাসিন্দা ইমরান মাজেদ ওরফে রাহুল ও মো. হানিফের নেতৃত্বে শুক্রবার জুমার নামাজের পর আন্দরকিল্লা শাহি জামে মসজিদের সামনে কুমিল্লায় কোরআন অবমাননার অভিযোগে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। তারা দুজন টেরিবাজারের কাপড় ব্যবসায়ী।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর আন্দরকিল্লা শাহি জামে মসজিদের সামনে ৪০০ থেকে ৫০০ লোক হাতে লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। তারা মসজিদের সামনে রাস্তায় ব্যারিকেড দেয়। বাধা দিলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশের কয়েক জন সদস্য আহত হয়। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে বলে এজহারে উল্লেখ করা হয়।
এজহারে আরও বলা হয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে তারা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পুরোনো কার্যালয়ের ফটক ভেঙে সেখানে ঢুকে ভাঙচুরের চেষ্টা করে।