পরিকল্পিত ও কার্যকর আন্দোলনের ছক কষছে বিএনপি

2049
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি আদায়ে একটি পরিকল্পিত ও কার্যকর আন্দোলনের ছক কষছে বিএনপি। সে লক্ষ্যে এবার ঢাকায় জোরালো আন্দোলন করতে চায় দলটি। বিষয়টি নিয়ে হাইকমান্ডের সঙ্গে দলের নেতাদের তিন দিনের বৈঠকেও আলোচনা হয়েছে। আন্দোলনের জন্য দ্রুতই সংগঠন পুনর্গঠনের কাজ শেষ করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা।

দীর্ঘদিন পর দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করে বিএনপি নীতি-নির্ধারকরা। গত তিন দিনের সিরিজ বৈঠকে সাংগঠনিক বিষয়ের পাশাপাশি ওঠে আসে দলের ভবিষ্যত কর্ম-কৌশলও। করোনা মহামারির স্থবিরতা কাটিয়ে ধীরে ধীরে মাঠের কর্মসূচিতে ফেরার তাগিদ দেন অনেকে। তবে নির্দলীয় সরকার ছাড়া নির্বাচনের বিপক্ষে মত দেন প্রায় সব নেতাই। দাবি আদায়ে রাজপথকে বেছে নেওয়ার কথা বলেন তাঁরা।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, ‘জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে যেটাই আলোচনা হয়েছে, পার্টির মুখপাত্র হিসেবে সেটা বলবেন আমাদের পার্টির মহাসচিব। তবে, পার্টির একজন কর্মী হিসেবে আমি মনে করি, যেহেতু এই সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না তাই আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। সেই আলোকেই বেশিরভাগ বক্তাই বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিরুদ্ধে মতামত দিয়েছেন।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘দলের সিনিয়র নেতাদের থেকে শুরু করে অঙ্গসংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন জিনিস নিয়ে আলোচনা করলাম। আমি মনে করি, দল খুব উপকৃত হয়েছে।’

রাজধানীতে কর্মসূচি সফল না হওয়ায় বিগত দিনে আন্দোলনের সুফল মেলেনি, তৃণমূল ও ঢাকার বাইরের নেতাদের এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সামনের দিনে ঢাকার রাজপথ দখলকে প্রাধান্য দিয়ে কর্মসূচি প্রণয়ন ও সংগঠন গোছানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা।

রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, ‘অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে সবাই আন্দোলনের জন্য ঢাকাকেই গুরুত্ব দিয়েছেন। এখানে পার্টি নতুন কমিটি দিয়েছে, নতুন নেতৃত্ব এসেছে। আমরা বিশ্বাস করি, এই নতুন কমিটির নেতৃত্বে অভীষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছাব।’

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এ ব্যাপারে বলেন, ‘আন্দোলনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আমরা সাংগঠনিক পর্যায়ে এবং তৃণমূল পর্যন্ত যত কমিটি আছে তাদের সঙ্গে বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে মতবিনিময় শুরু করেছি। এবং আন্দোলনের একটি মনোভাব সাধারণ মানুষের কাছ থেকেও আমরা পেয়েছি। তাতে আমরা আশাবাদী যে, এই একটি ইস্যুতে, অগণতান্ত্রিক সরকারকে সরিয়ে গণতন্ত্রের মুক্তি- এই দাবিতে আন্দোলনে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সমর্থন পাওয়া যাবে। নেতাকর্মীরাও আমাদের উজ্জীবিত হয়ে আছে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু আরও বলেন, ‘সরকারের চলে যাওয়াটাই হচ্ছে মূল লক্ষ্য। তা না হলে এদেশের মানুষ গণতন্ত্র পাবে না। গণতন্ত্রের কাছেও যেতে পারবে না। মানুষ তো ভোট দিতেই আসবে না। সেই কারণে, সর্ববৃহৎ দল হিসেবে বিএনপির একটি ভূমিকা আছে। সেটা বিএনপি যথাসময়ে পালন করবে।’

সেই আন্দোলন কবে হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘দিনক্ষণ দিয়ে আন্দোলন হয় না।’

বিএনপির নেতারা জানান, নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে সোচ্চার এমন দলগুলোকে নিয়ে ঐক্য করতে চায় বিএনপি।

এ ব্যাপারে স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু মনে করেন, ‘রাজপথে সবাই যখন নামবে তখন এমনিতেই ঐক্য হয়ে যাবে।’

শেয়ার করতে ক্লিক করুন