চোখ ধাঁধানো অফার আর আকর্ষণীয় পণ্যের কারিশমায় ই-কমার্সের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেন লাখ লাখ গ্রাহক। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে এখন হতাশা আর ক্ষোভ বিরাজ করছে তাদের মাঝে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারই সমাধান নয়, যে কোনো মূল্যে বিনিয়োগের টাকা উদ্ধারের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
রাজধানীর নড্ডাপাড়ার বাসিন্দা রকি। বড় পর্যায়ে বিনিযোগ করে ব্যবসা করার সামর্থ্য না থাকায় বেছে নিয়েছিলেন ই-কমার্স খাতে বিনিয়োগ করে কিছু আয় করার। কিন্তু প্রতারণার ভেলকিবাজিতে এখন মূল টাকা ফেরত পাওয়া নিয়েই দুশ্চিন্তায় তিনি।
তিনি বলেন, লভ্যাংশ তো পাবো বলে আশা করি না। কিন্তু পাওনাদারদের টাকাগুলো যেন পরিশোধ করতে পারি, সেজন্য আমাদের আসলে মূল টাকাটাই দরকার।
তারমতো এ পাড়ার আরও রয়েছে তানজিল, রাফিসহ কয়েকজন তরুণ। যারা একটি প্রতিষ্ঠানেই করেছেন প্রায় ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগ।
তারা বলছেন, আমরা এখানে ৬-৭ জন ছাত্র আছি। সব মিলিয়ে প্রায় ২০-২৫ লাখ টাকা আছে। তার দিকে তাকিয়েই টাকাগুলো আমরা দিয়েছি। কয়েক মাসের মধ্যে যদি আমাদের মূল টাকাটা দিয়ে দেয়, তবে বাঁচার ইচ্ছাটা জাগতে পারে! টাকাগুলো ঋণ করে এনেছিলাম। এখন তো প্রচুর চাপের মধ্যে আছি।
প্রতারণার এ কৌশল নতুন নয়। প্রায় দুই দশক ধরেই চলছে এমন ভুঁইফোড় প্রতিষ্ঠানের গড়ে ওঠার দৃশ্য। যুবক থেকে শুরু, প্রতারণার অভিনব কৌশলে গ্রাহকরা হারিয়েছেন প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এসব ঘটনায় হুমকির মুখে পড়েছে সম্ভাবনাময় খাত ই-কমার্স, যার প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে। সাম্প্রতিক ঘটনায় গ্রাহকদের আস্থায় সংকট ও নতুন উদ্যোক্তাদের নিরুৎসাহিত করবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ ফয়জুল লতিফ চৌধুরী।
তিনি বলেন, এটি আসলে ব্যক্তিগত সংকটের সৃষ্টি করবে। বিশেষ করে গত ২ বছরে আমাদের যে অর্থনীতির অবস্থা, যেখানে আমরা চাকরি সৃষ্টি করতে পারছি না, সেখানে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এই যে তারা ২০-২৫ লাখ টাকা যোগাড় করেছে। এখানে দ্বিপাক্ষিক আস্থার বিষয়টা আছে। একটা হচ্ছে- যারা নতুন উদ্যোক্তা, যারা ভাবছেন এই প্লাফর্ম ব্যবহার করবেন, তারা তো এখন দ্বিধাগ্রস্ত হবেন, যে তাদের প্রতি কি ভোক্তারা আস্থা রাখতে পারবেন?
শুধু আইনি কাঠামো নয়, ই কমার্স খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যাংকের মতো দৈনিক অর্থ লেনদেনের রিপোর্ট বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানোর পরামর্শ সংশ্লিষ্টদের